“সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা” চাইনিজ কাল্ট খ্রিস্টানের পুস্তক কি বাইবেলীয়?
লেখকঃ- S.Murmu
আজকের বিষয় বস্তু দেখে অনেকে ভাবতে পারেন এটা আবার কেমন ধরনের বিষয় বস্তু হলো কি! “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা চাইনিজ কাল্ট খ্রিস্টানের পুস্তক কি বাইবেলীয়?” দেখুন বিষয় বস্তু দেখে উত্তেজিত হবে না। অনুগ্ৰহ করে সকলে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন। কারণ এই চাইনিজ বা চৈনিক খ্রিস্টান যাই বলতে পারেন। তারা খ্রিস্টানদের জন্য খুবই বিপদজ্জনক। এরা অনন্ত জীবন থেকে মানুষকে দূর তো করে, সাথে যারা তাদের ধর্মকে ত্যাগ করে তাদেরকে মেরে ফেলে। এমনিতে এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপের সম্পর্কে পূর্বেই আমরা, আমাদের মুল ওয়েবসাইটে পোস্ট দিয়েছি, এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপের সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে লিঙ্ক দেখুন; “সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা/ চমকতি পূর্বি বিজলি মন্ডলী কি?” চলুন কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আলোচনার দিকে অগ্ৰসর হই। বর্তমান দিনে এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপ সোশ্যাল মিডিয়া খুবই সক্রিয় রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্রত্যেকটি খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের গ্ৰুপে তাদের পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়। এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপের সম্পর্কে, সোশ্যাল মিডিয়া খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের দ্বারা তেমন একটা পোস্ট ও দেওয়া হয় না। হাঁ সোশ্যাল মিডিয়া একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভ্রাতা দ্বারা এদের সম্পর্কে পোস্ট দেওয়ার হয় যার নাম, আমরা এখানে উল্লেখ করতে বিহীত বুঝি উনার নাম হলো; Partha Dasgupta, দেখা যায় কমবেশি এই খ্রীষ্ট ভ্রাতা, এদের সম্পর্কে পোস্ট করেই থাকেন। অবশ্যই এই কাজের জন্য উনি প্রশংসার যোগ্য। কারণ একজন প্রকৃত খ্রীষ্ট বিশ্বাসী উচিৎ, সে যেন অন্য খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের নানা ভণ্ড শিক্ষা প্রদান থেকে বা ভণ্ড মেষপালকদের থেকে সচেতন করেন, যেমন উদাহরণ স্বরূপ প্রভু যীশুর কথা নেওয়া যেতে পারে;
[মথি ৭:১৫] ভাক্ত ভাববাদিগণ হইতে সাবধান; তাহারা মেষের বেশে তোমাদের নিকটে আইসে, কিন্তু অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়া।
[মথি ২৪:২৪-২৫] কেননা ভাক্ত খ্রীষ্টেরা ও ভাক্ত ভাববাদীরা উঠিবে, এবং এমন মহৎ মহৎ চিহ্ন ও অদ্ভুত অদ্ভুত লক্ষণ দেখাইবে যে, যদি হইতে পারে, তবে মনোনীতদিগকেও ভুলাইবে। দেখ, আমি পূর্বেই তোমাদিগকে বলিলাম।
প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মতো আমাদের উচিৎ অপরকে যেন আমরা সতর্ক করি। তা সে নতুন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হোক বা দুর্বল বিশ্বাসী হোক এমনকি পরিপক্ক খ্রীষ্ট বিশ্বাসীও হোক। এই সচেতন বা সতর্ক সম্পর্কে প্রভু যীশুর শিষ্য এবং প্রেরিত তা যোহন হোক বা পিতর হোক এমনকি পৌল ও বলে গেছেন। পৌল তো আবার খুব সুন্দর শিক্ষা দিয়ে থাকেন। সাধু পৌল ওই ভণ্ড শিক্ষাকে খণ্ডন করার কথা বলেন যথা;
[২ করিন্থীয় ১০:৫] আমরা বিতর্ক সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছি, এবং সমুদয় চিন্তাকে বন্দি করিয়া খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করিতেছি।
এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপ বাইবেলকে মানে না। এরা মনে করে বাইবেল পরিবর্তন হয়েছে, যেমনটি আমাদের প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা বলে থাকে। বাইবেল পরিবর্তন হয়ে গেছে তাই এরা কিছু বাইবেল অনুবাদ করে নিয়েছে। তাদের ধর্ম পুস্তকের নাম হলো; (১) বাক্য দেহে আবির্ভূত হল। (২) ঈশ্বরের ঘর থেকে বিচারের সূচনা হয়। (৩) সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যর নির্বাচিত সংকলন। বর্তমান এই তিনটি ধর্ম পুস্তক অনুবাদ করা হয়েছে। এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপ নিজেকে এতোই বুদ্ধিমান মনে করেন যে, অবশেষে কিছু বাইবেল অনুবাদ করে ফেলেছে। অনুবাদ তো করেছে কিন্তু মজার ব্যাপার বাংলায় বিরাম চিহ্নের ব্যবহারই জানে না। বিরাম চিহ্ন কোথায় কিভাবে ব্যবহার হয় বলে! বিরাম চিহ্ন থেকে অধিক বাংলায় বানান ও জানে না। তাদের বাইবেল অনুবাদে বানান ভুল রয়েছে, এমনকি একটা কথা বারংবার রিপিট করা হয়েছে। রিপিট বলতে যেমন আমাদের বাইবেলে কিছু কথা রিপিট হয় তা ধরুন পুরাতন নিয়মের কিছু কথা নূতন নিয়মে উদ্ধৃতি দেওয়া হয় সেভাবে নয়।
এদের রিপিট বলতে যেমন “পথ” কথা এই পথ কথা একই লাইনে বাবার উল্লেখ করেই, করেই যাচ্ছে। এরা নাকি বাইবেল অনুবাদ করবে! তা ছাড়ুন আমরা মুল কথায় ফিরে আসি। এদের ধর্ম পুস্তক অর্থাৎ বাইবেল, তা বাইবেলীয় কি না তা বাইবেল ভিত্তিক যাচাই করি। এক কোথায় এই চাইনিজ কাল্ট গ্ৰুপ বা ভণ্ড চাইনিজ খ্রিস্টানের পুস্তক বাইবেল ভিত্তিক নয়। কেন এই পুস্তক বাইবেল ভিত্তিক নয় তা তাদের পুস্তক থেকেই দেখে নেওয়া যাক। অবশ্যই এখন ও আমি এদের সম্পূর্ণ পুস্তক অধ্যায়ন করিনি। কিন্তু যতটুকু অধ্যায়ন করা হয়েছে সেখানে থেকেই এদের বিভ্রান্তিকর ধর্ম পুস্তকের অনুবাদের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
পুস্তক নাম; ঈশ্বরের ঘর থেকে বিচারের সূচনা হয়।
এই পুস্তকের সূচিপত্র; দু’টি অবতার অবতাররূপের তাৎপর্য সম্পূর্ণ করে।
এই দু’টি অবতার অবতাররূপের তাৎপর্য সম্পূর্ণ করে। এখানে এমন কিছু শিক্ষা রয়েছে যা বাইবেলের বিপরীত শিক্ষা। যীশুর স্ত্রী রয়েছে। অনুগ্ৰহ যুগ শেষ। মহিলা ঈশ্বর ইয়াং ঝিয়াংবিন (Yang Xiangbin) আর যীশু এক ছিলেন। মহিলা ঈশ্বর ইয়াং ঝিয়াংবিন (Yang Xiangbin) আর যীশু এক আত্মা থেকে এসেছে। মহিলা ঈশ্বর ইয়াং ঝিয়াংবিন (Yang Xiangbin) ন্যায়ের প্রতিফল দিতে এসেছে অর্থাৎ শাস্তি স্বরুপ। যীশুর বলিদান পর্যাপ্ত নয়। ঈশ্বর করুনাময় ও প্রেমময় নয়। ঈশ্বরকে আত্মা হিসাবে অস্বীকার।
সূচিপত্র; অবতার রূপের রহস্য (১)
এখানে যীশুর ঈশ্বরীয় অস্বীকার।
পুস্তকের নাম; সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের বাক্যর নির্বাচিত সংকলন।
সূচিপত্র; ত্রয়ী কি বিদ্যমান?
ত্রয়ী এক ঈশ্বর অস্বীকার। যীশু সৃষ্টির সময় উপস্থিত ছিলেন না। ত্রয়ী এক ঈশ্বর তীব্রভাবে নিন্দা যা শয়তান সহিত তুলনা করা। যীশুকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যীশু মানবজাতি উদ্ধারকর্তা/ মুক্তিদাতা/ ত্রাণকর্তা অস্বীকার। যীশুকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে অস্বীকার। যীশুর পিতাকে অস্বীকার করা অর্থাৎ যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বরকে পিতা বলা অস্বীকার। যীশুকে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র বলা অস্বীকার।
দেখেছেন এদের বাইবেল কিভাবে বিপরীত শিক্ষা দিয়ে থাকে। এখানে কয়েকটি মুল শিক্ষার জবাব বাইবেল ভিত্তিক প্রদান করা হলো; যীশুর কোনো স্ত্রী ছিলো না। বাইবেল বলে যীশু মানবজাতির পাপের মুল্য দিতে এসেছিলেন; (মার্ক ১০:৪৫) তাছাড়া যীশুর স্ত্রী বধূ হলো প্রকৃত খ্রীষ্ট বিশ্বাসী; (প্রকা ১৯:৭-৯, ২১:১-২)। যীশুর বলিদানের ফলেই মানবজাতির পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়; (রোমীয় ১০:৯, ১ পিতর ২:২৩-২৪)। ঈশ্বর প্রেমময় ও করুণাময়; (গীত ১০৩: ৮, ১১, ১৭, যিরমিয় ৩:১২, যোহন ৩:১৬, ১ যোহন ৪:১৯)। ঈশ্বর আত্মা; (গীত ২৩৯:৭, যিশা ৩৪:১৬, যোহন ৪:২৪)। যীশু ঈশ্বর ছিলেন; (যোহন ১:১, ১৪, কলসীয় ২:৯)। যীশু সৃষ্টির সময় ছিলেন; (আদি ১:১, ২৭, যোহন ১:১-৩, ১ করি ৮:৬, কলসীয় ১:১৬, ইব্রীয় ১:২-৩)। এয়ী এক ঈশ্বর অস্তিত্ব রয়েছে। ট্রিনিটি ঈশ্বরকে প্রমানিত করার জন্য বহু বাক্যে রয়েছে। এখানে কিছু বাক্যে তুলে ধরা হলো; (দ্বি.বি ৬:৪, ১ করি ৮:৪, গালা ৩:২০, আদি ১:১, ২৬, ৩:২২, ১১:৭, যিশা ৬:৮, ৪৮:১৬, ৬১:১, মথি ৩:১৬-১৭, ২৮:১৯, ২ করি ১৩:১৪, লূক ৪:১৪-১৯, ২২:৪২, যোহন ১:১,১৪, ৫:২০, ৬:২৭, ১৪:১৬, ২৬, ১৫: ২৬, ১৬:৭, ১৬:১৩-১৪, রোমীয় ১:৭, ৯:৫, ১ পিতর ১:২, কলসীয় ২:৯, ১ করি ৩:১৬, ৮:৬, ইব্রীয় ১:৮, ১ যোহন ৪:১৪, প্রেরিত ৫:৩-৪)।
যীশুকে সৃষ্টি করা হয়নি বরং যীশুই সৃষ্টিকর্তা ছিলেন। যীশু খ্রীষ্টে সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছিল। সমস্ত কিছু তাঁর মাধ্যমে এবং তাঁর জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে; (কলসীয় ১:১৬)। যীশু মানবজাতি উদ্ধারকর্তা/ মুক্তিদাতা/ ত্রাণকর্তা; ( লুক ১৯:১০, প্রেরিত ১০:৪২-৪৩, ১ থীম ১:১৫, রোমীয় ৫:৯)। যীশু ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন। বাইবেলে নূতন নিয়মে যীশুকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে প্রায় ৪০ এর বেশি উল্লেখ রয়েছে; (গীত ২:৬-৭, লূক ১:৩৫, যোহন ১০:৩৬)। বাইবেল সুস্পষ্ট ভাবে বলে যীশু ঈশ্বরকে পিতা বলে ডেকেছেন; (যোহন ৫:১৭,১৯, ১০:৩০,৩৬, ১৪:৬,১০,২৮, ২০:১৭)। যীশু ঈশ্বরের একমাত্র/ একজাত পুএ ছিলেন; (যোহন ১:১৪,১৮, ৩:১৬,১৮, ১ যোহন ৪:৯) এই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের গির্জা চাইনিজ কাল্ট খ্রিস্টানের ধর্ম পুস্তক বাইবেল বিরোধিতা শিক্ষা প্রদান করে, তাই চাইনিজ বাইবেল এটি বাইবেলীয় নয়। এটি একটি ভণ্ড পুস্তক।
ঈশ্বর সকলকে আশীর্বাদ করুন।
আমেন।।
0 Comments