প্রথম ভাগে আমরা লুক লিখিত সুসমাচারের ১৫:১১-১৬ পদ পর্যন্ত আলোচনা করেছিলাম। যদি আপনি এখন ও প্রথম পর্ব অনুসরণ করেননি তো এখানে ক্লিক করে প্রথম পর্ব অনুসরণ করুন আপনাদের প্রার্থনা ও পিতা ঈশ্বরের কৃপায় আমি এই বাক্য নিয়ে লিখতে পারছি তার জন্য স্বর্গীয় পিতার ধন্যবাদ করি। এবার আমরা যে মূল আলোচনায় যাবো সেটা আমরা একটু মনযোগ সহকারে পাঠ করবো।
বেশিরভাগ বিশ্বাসী এই হারানো পুত্রের ন্যায় জগতের ভোগ বিলাসের মধ্যে হারিয়ে যায়/ যাচ্ছে। খুব কম ফিরে আসে কিন্তু সেই ছোটো পুত্রটি শেষ পর্যন্ত ফিরে এসেছিল। কি তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করেছিল? ফিরে এসে সে কি পেয়েছিলো?
পঞ্চমতঃ - [লুক ১৫:১৭-১৯] কিন্তু চেতনা পাইলে সে বলিল, আমার পিতার কত মজুর বেশী বেশী খাদ্য পাইতেছে, কিন্তু আমি এখানে ক্ষুধায় মরিতেছি। আমি উঠিয়া আমার পিতার নিকটে যাইব, তাঁহাকে বলিব, পিতঃ, স্বর্গের বিরুদ্ধে এবং তোমার সাক্ষাতে আমি পাপ করিয়াছি; আমি আর তোমার পুত্র নামের যোগ্য নই; তোমার এক জন মজুরের মত আমাকে রাখ।
সে চেতনা পেয়েছিলো যা তাকে ফিরে আসার জন্য সাহায্য করে ছিলো। সর্ব্ব প্রথমে তার অন্তরে সেই চেতনাই কাজ করেছিল। সে ক্ষুধার জ্বালায় যখন মৃত্যুর দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সে সময়ে সে চেতনা ফিরে পেলো। অনেকে চেতনা পাওয়ার পরও আর ফিরে আসতে পারেনা। কারণ তার পরের যে কাজ, সেটা তার কাছে খুব শক্ত মনে হয় যা হচ্ছে “অনুশোচনা”। এখানেই শয়তান আমাদের আটকে দেয়। সে কখনোই চাইবেনা মানুষ অনুশোচনা করে আবার পিতার কাছে ফিরে যাক। অনেক মানুষ আজ এই জায়গাতে এসে থমকে যায়। শয়তান আমাদের মনের ভিতরে সর্বদা বলতে থাকবে তুই একজন মহাপাপী, তোর দ্বারা আর কিছুই হবে না, তোর সব কিছু শেষ, আমার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দে এবং মানুষ খুব সহজেই এই ফাঁদে পড়ে। আর তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে ফেলছে প্ৰভু যীশু বলেছেন যথা।
[যোহন ১০:১০ পদ] চোর আইসে, কেবল যেন চুরি, বধ ও বিনাশ করিতে পারে; আমি আসিয়াছি, যেন তাহারা জীবন পায় ও উপচয় পায়।
চুরী, নেশা, ড্রাগস, ধর্ষণ, বিবাহ বিচ্ছেদ, লড়াই ঝগড়া, নানান ধরণের রোগ, দারিদ্রতা, গর্ভপাত, ধোঁকাবাজি,ভুল শিক্ষা, লোভ লালসা, কামনা বাসনা, ভ্রষ্ট্রচার, ব্যাভিচার, গালাগালি, মিথ্যা, আত্মহত্যা, জাদুটোনা,অপহরণ, অন্ধবিশ্বাস, মূর্তিপূজা, এই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে শয়তান আমাদের কাছে বিনাশ নিয়ে আসে। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে আসার আগে প্রায় চারশো বছর সদাপ্রভু নিস্তব্ধ ছিলেন। মালাখি থেকে যোহন পর্যন্ত silent period বলা হয়। আর তার পরেই প্রভু যীশুর জন্য পথ প্রস্তুত করতে, রাজপথ সকল সরল করতে যোহন উপস্থিত হলেন, পাপমোচনের জন্য মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্ম প্রচার করতে লাগলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রথম প্রচার ছিল যেমন বাক্য বলে।
[মথি ৪:১৭ পদ] ‘‘মন ফিরাও, কেননা স্বর্গ-রাজ্য সন্নিকট হইল’’।
এই যে মন পরিবর্তনের জন্য চেতনা, অনুশোচনা যখন আমাদের মনের ভিতরে আসে তখন যদি সেটাকে কাজে রূপান্তরিত না করি, তাহলে আমরা পিতার কাছে ফিরে আসতে পারবোনা। সেই হারানো পুত্রটি চেতনা পাবার পর সঙ্গে সঙ্গে অনুশোচনা করেছিল। সে ফিরে এসেছিল। আর শুধু তাই নয় সে অনুতাপ হৃদয় নিয়ে পিতাকে কি বলে ছিলো? পিতঃ, স্বর্গের বিরুদ্ধে এবং তোমার সাক্ষাতে আমি পাপ করিয়াছি; আমি আর তোমার পুত্র নামের যোগ্য নই;।
সে প্রথমেই বলে ছিল পিতা, স্বর্গের বিরুদ্ধে। সে তো তার পিতার অবাধ্য হয়ে ছিল। কিন্তু তার স্বীকারোক্তি কি ছিল? স্বর্গের বিরুদ্ধে। যখন আমরা পিতা মাতার অবাধ্য হই, তখন যে আমরা কেবল পিতা মাতার বিরুদ্ধে যাই তা নয়। প্রথমেই আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতার বিরুদ্ধে পাপ করি। বাইবেল আমাদের শিক্ষা দেয় যে পিতা মাতার অবাধ্যতা ভয়ানক পাপ। দশটি আদেশের মধ্যে, আমাদের বাবা-মাকে সম্মান করার জন্য একটি বিশেষ আদেশ পিতা ঈশ্বরের দেওয়া দশ আজ্ঞার মধ্যে পঞ্চম আজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত।
আমরা যখন এই পৃথিবীতে কারও বিরুদ্ধে কিছু করি। প্রথমেই আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতার বিরুদ্ধে পাপ করি। তারপরে আমরা যার বিরুদ্ধাচরণ করছি তার বিরুদ্ধে পাপ করছি। একসাথে দু দুটো পাপের মধ্যে আমরা পড়ি। কত ভয়ানক! হারানো পুত্র প্রথমেই তার পাপের স্বীকারোক্তি করে স্বর্গের বিরুদ্ধে এবং তার পিতার বিরুদ্ধে যা পাপ করেছে।তারপরে সে তার অযোগ্যতা কে প্রকাশ করে। নিজেকে শূন্য করে নত নম্র করে একজন দাসের ন্যায় নিজেকে রাখে। যেন একটু খাদ্য পায় এই মনোভাব নিয়ে সে আসে।
বাইবেল বলে আপনার পাপ যা কিছুই হোক না কেন, শুধু অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে একবার প্রভু যীশুর কাছে আসুন। প্রভুযীশু তাঁর ক্রুশীয় ক্ষমার বাণীর মধ্যে দিয়ে তাঁর ক্ষমার হৃদয়কে আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। যেন আমরা কেও পাপের মধ্যে হারিয়ে না যাই যথা।
[যিশাইয় ১:১৮ পদ] সদাপ্রভু কহিতেছেন, আইস, আমরা উত্তর প্রত্যুত্তর করি; তোমাদের পাপ সকল সিন্দূরবর্ণ হইলেও হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ হইবে; লাক্ষার ন্যায় রাঙ্গা হইলেও মেষলোমের ন্যায় হইবে।
বিঃদ্রঃ- তৃতীয় পর্ব অবশ্যই অনুসরণ করবেন।।
0 Comments