বাংলাদেশে খ্রিষ্টীয়ান ধর্ম সূত্রপাত কখন হয়?
লেখকঃ S.Murmu
এদেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে বসবাসকারী জনগোষ্টির ক্ষুদ্র অংশের খ্রীষ্টধর্ম একটি। বাংলাদেশকে চিনতে জানতে বাংলাদেশের মানুষের ধর্মাচার ও সংস্কৃতি জানাটা জরুরী। সেটি লক্ষ্যে রেখেই এই বিষয় বস্তুটি লেখা। ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ০.৩০% (প্রায় ৫০০,০০০) খ্রিষ্টান। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায় সংখ্যালঘু ধর্ম একটি খ্রীষ্টধর্ম। সমগ্ৰ বিশ্বের ধর্মগুলির মধ্যে খ্রিষ্টানদের ধর্ম অন্যতম এবং সবচেয়ে প্রচারমুখী ধর্ম। এই ধর্মের উৎপত্তি স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জীবন ও বাণীকে ভিত্তি করে। একটা কথা পূর্বেই সুস্পষ্ট করে দিতে চাই নচেৎ আপনি বিভ্রান্তির মধ্যেই পড়ে থাকবেন। খ্রিষ্টধর্ম বলে কোনো কিছু হয় না। কারণ খ্রীষ্টধর্ম হলো; বিশ্বাসের প্রতিক। বিশ্বাসকে কখনও ধর্মের রূপ দেওয়া যায় না কারণ বিশ্বাস অন্তরে থাকে। যেহেতু নিজের বিশ্বাসকে জগতের কাছে প্রকাশ করা হয় আর এটি পরিচয় হিসাবে বহন করা হয় তাই খ্রীষ্টধর্ম বলা হয়।
বাইবেল খ্রিষ্টীয়ান শব্দ প্রথম ব্যবহারঃ
খ্রিষ্টীয়ান শব্দের অভিধানের সংজ্ঞা হবে; একজন ব্যক্তি যিনি যীশুকে খ্রীষ্ট হিসাবে বিশ্বাস করেন এবং তাঁর (যীশুর) শিক্ষার উপর ভিত্তি করে ধর্মে বিশ্বাস করেন। তিনিই একজন খ্রিষ্টীয়ান। বাইবেলের নূতন নিয়মে “খ্রীষ্টীয়ান” শব্দটি প্রায় তিন বার উল্লেখ্য রয়েছে; (প্রেরিত ১১:২৬; ২৬:২৮; ১ পিতর ৪:১৬)। আন্তিয়খিয়াতে বর্তমান যেটি “সিরিয়া” সেখানেই যীশু খ্রীষ্টের অনুসরণকারীদের প্রথম ‘খ্রীষ্টিয়ান’ বলে ডাকা হয়েছিল। কারণ তাদের আচার-আচরণ, কাজ এবং কথাবার্তা ছিল প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মতন। আক্ষরিক অর্থে যারা যীশু খ্রীষ্টের দলের বা যারা খ্রীষ্টের অনুসারী তারাই হচ্ছে খ্রীষ্টিয়ান। বাইবেলের বাক্যে যথা;
[প্রেরিত ১১:২৬] আর তাঁহারা সম্পূর্ণ এক বৎসর কাল মণ্ডলীতে একত্র হইতেন, এবং অনেক লোককে উপদেশ দিলেন; আর প্রথমে আন্তিয়খিয়াতেই শিষ্যেরা ‘খ্রীষ্টীয়ান’ নামে আখ্যাত হইল।
খ্রীষ্ট নামের অর্থঃ
যীশুখ্রীষ্টের প্রতি অকৃত্রিম ও পূর্ণ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই এই খ্রিষ্টান ধর্মের উৎপত্তি ও বিকাশ যাত্রা ঘটে। “খ্রীষ্ট” এর জন্য গ্রীক শব্দটি হল; (Χριστός-Christos) এবং এটি হিব্রু শব্দের ভাষান্তর যা (מָשִׁיחַ-mashiach) থেকে এসছে। “খ্রীষ্ট” হলেন ঈশ্বরের দ্বিতীয় ব্যক্তি। যীশু “খ্রীষ্ট” উপাধি অর্থ হ'ল তিনি ঈশ্বরের “অভিষিক্ত” যিনি পুরাতন নিয়মের ভবিষ্যদ্বাণীগুলি পূর্ণ করেন। এবং তিনি বেছে নেওয়া ত্রাণকর্তা যিনি পাপীদের উদ্ধার করতে এসেছিলেন। বাইবেলে “খ্রীষ্ট” নাম ৫১৬ বার উল্লেখ রয়েছে। নূতন নিয়ম রোমীয় পুস্তক “খ্রীষ্ট” শব্দ ৬৬ বার উল্লেখ রয়েছে। খ্রীষ্ট নামের সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে লিঙ্ক দেখুন; “খ্রীষ্ট নামের অর্থ?”
বাংলাদেশের খ্রীষ্টধর্ম সূএপাতঃ
ঐতিহাসিক অনুযায়ী, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মৃত্যু পর যিরূশালেম থেকে আগত, এক ব্যক্তি যার নাম; থোমা। যাকে বাইবেলের ভাষায় দিদুমঃ ও বলা থাকে, দিদুমঃ কথার অর্থ হল; “যমজ” (যোহন ১১:১৬)। খ্রিস্টান ধর্ম ৫২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে কেরালা কোডুঙ্গালুর (Kodungallur) নামক জায়গায় প্রভু যীশু খ্রীষ্টের শিষ্য থোমা দ্বারা সূএপাত হয়। সাধু থোমা হাজার হাজার হিন্দু ব্রাহ্মণকে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন। এবং তাদেরকে যীশুর বলিদানের ইতিহাসে মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সহজ জীবনধারা, ভাল আচরণের প্রতি আকৃষ্ট করেছিলেন। সময়ের সাথে সাথে, তিনি উদার ভারতীয়দের সহায়তায় মালাভারে সাতটি মন্ডলী নির্মাণ করেন। “ভারতের খ্রীষ্টীয়ান ধর্ম সূত্রপাত কখন?” লিঙ্ক দেখুন। চতুর্থ শতাব্দীতে, কিছু সিরিয়ান ধর্মযাজক Edessa's Bishop নেতৃত্বে মালাবার উপকূলে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করছিলেন, কিন্তু এটি বহু শতাব্দী ধরে উপমহাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা ২০শে মে, ১৪৯৮ সালে যখন ভারতে সমুদ্রপথ আবিষ্কার করেন এবং তারপরে একটি যখন নতুন কৌশলের মাধ্যমে মালাবারের কালিকট (বর্তমান কোঝিকোড়) খ্রীষ্টধর্ম প্রচার করেন। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতার সময় যারা ব্যবসায়ী হিসেবে এই উপমহাদেশে প্রবেশ করেছিল তারা ছিল ডাচ, ফরাসি, ডেনিশ এবং ইংরেজর। তবে পর্তুগিজদের সাথে খ্রিস্টধর্ম বাংলায় আসে।
পর্তুগিজ ডোম ফ্রান্সিসকো আলমিদা (Dom Francisco de Almeida 1505-1509) এর প্রথম রাজকীয় উত্তরাধিকারী এবং ১৫১০ সালে দ্বিতীয় রাজকীয় উত্তরাধিকারী আফনসো ডি আলবুকার্ক (Afonso de Albuquerque)
বাংলায় খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেছিলেন। ১৫১৪ সালে ক্যাথলিক পোপ লিও দ্বাদশ (Leo X, originally Giovanni de’ Medici) আলবুকার্ক স্থানীয় বাঙালি মহিলাদের সাথে আন্তঃবিবাহকে উৎসাহিত করে খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের বংশধররা খ্রীষ্টানদের প্রথম প্রজন্ম। ক্যাথলিক পোপ এবং পর্তুগালের রাজার মধ্যে চুক্তির সুবাদে, ১৫১৪ সালের মধ্যে পর্তুগিজরা বাংলায় অবাধে খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের একচেটিয়া অধিকার লাভ করে। ১৫১৭ সালে, সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্ (গৌরের সুলতান) শাসনামলে পর্তুগিজ ক্যাপটেন জোয়াও কোয়েলহো (Joao Coelho) চেত্তগৌং/ চাঁটিগং/ চাটিগাঁও যাই বলতে পারেন যেটি বর্তমান নাম; চট্টগ্রাম আসেন। তিনি এবং ১৫১৮ সালে সিলভেরা আরাকানে (দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় অবস্থিত) উত্তরাংশ করায়ত্ত করেন। এই দুই ব্যবসায়ী সমুদ্র পাড়ি দিয়েছিলেন- প্রতি বছর গোয়া থেকে বাংলায়। ৬ই এপ্রিল, ১৫৩৮ সালে গৌরের উপর শের খাঁ-এর আক্রমণের সময়, পর্তুগিজরা সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহকে সাহায্য করেছিল এবং সুলতান খুশি হয়ে ১৫৩৭ সালে চট্টগ্রাম এবং সপ্তগ্রামে (বর্তমানে হুগলি) কলোনি এবং শুল্কশালা বসানোর অনুমতি দেন।
গোয়া থেকে গঠিত হয়েছিল এবং বাংলা কোচিন খ্রীষ্টীয় ধর্মাধ্যক্ষের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা। কোচিনের বিশপ বাংলাকে খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের জন্য শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই কারণে তিনি ১৫৭৬ সালে দুই মহান জেসুইট ক্যাথলিক ধর্মযাজক ফাদার আন্তোনিও ভাজ এবং পেদ্রো দিয়াস নামক দুইজন ফাদার বাংলাদেশে বাস করতেন পাঠান এবং তারা সেখানে বাস করতেন। কিন্তু তখনও নিয়মিত গির্জা নির্মাণ বা প্রচারণার তেমন কোন ব্যবস্থা ছিল না। ১৫৭৬ সালে আরাকানিরা চট্টগ্রাম বন্দর দখল করলে পর্তুগিজরা ভীত হয়ে পড়ে। তারপর ১৫৭৭ সালে পর্তুগিজ ক্যাপ্টেন পোদ্রো তাভারেস (Pedro Tavares) ফতেহপুর সিক্রিতে একটি স্থায়ী প্রাসাদ নির্মাণের জন্য মুঘল সম্রাট জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবরের (১৫৫৫-১৬০৫) কাছে যান। হুগলি বন্দরে সম্রাট তাকে লিখিত অনুমতি দিয়েছিলেন। একই সময়ে, মিশনারিরাও খ্রীষ্টধর্ম প্রচারের এবং বাংলায় তাদের বসতি, গির্জা (মন্ডলী) ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি পান। পর্তুগিজরা স্থানীয় নারীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর বা স্থানীয় বাঙালিদের ধর্মান্তরিত করার পর, তাদের বংশধররা বাংলাদেশে আদি খ্রীষ্টানদের প্রথম প্রজন্মে পরিণত হয়। অতিরিক্ত স্থানীয়রা ইসলাম , হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম থেকে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। খ্রীষ্ট ধর্মবিশ্বাসের বিস্তার লাভের মাধ্যমে খ্রীষ্টান জনগণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।
১৫৮০ সালে তারা সম্রাট আকবরকে খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছিল। ৩রা মে ১৫৯৮ সালে ফাদার ফ্রান্সিসকো এবং ফাদার দমিঙ্গো ডি'সুজা কোচিন থেকে হুগলীতে পৌঁছেন। যখন তারা যশোরে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১লা অক্টোবর, ১৫৯৮ তারিখে ব্যান্ডেল (ডাচ শহর) চট্টগ্রামের যাত্রা শুরু করেন। তখন যশোরের রাজা ছিলেন প্রতাপাদিত্য ছিলেন। যিনি বিখ্যাত বারো ভূঁইয়াদের একজন। অনেক পর্তুগীজ রাজকীয় সেনাবাহিনীতে তাঁর অধীনে থেকে গিয়েছিল এবং এই পর্তুগিজদের দ্বারাই যশোর থেকে বাংলায় খ্রীষ্টধর্ম শুরু হয়েছিল। ১৫৯৯ সালের অক্টোবরে রাজার আমন্ত্রণে ফাদারা গোয়া থেকে চান্দিকানে আসেন। এবং তারা যশোরে থাকার কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় ২০০ জন বাঙালিকে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত করেন। ২০ নভেম্বর, ১৫৯৯ ফাদার ফ্রান্সিসকো এবং ফাদার দমিঙ্গো ডি'সুজা রাজা প্রতাপাদিত্যের সাথে দেখা করেন, একটি গির্জা (মন্ডলী) নির্মাণের অনুরোধ নিয়ে। তখন যশোরের রাজা প্রতাপাদিত্যের অনুমতি দেন এবং তহবিল ও জমি দিয়ে তাদের সমর্থন করেন।
বাংলাদেশ চার্চ/ মন্ডলী ইতিহাসঃ
জেটুইটরা বাংলাদেশের বর্তমান সাতক্ষীরা জেলার চান্দিকান বা ইশ্বরীপুরে ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম একটি ক্যাথলিক গির্জা নির্মিত হয়, যেই গির্জা/ মন্ডলী/ চার্চ নাম ছিলো; 'The Church of the Holy Name of Jesus' এই মন্ডলী যা আনুষ্ঠানিকভাবে ১লা জানুয়ারি, ১৬০০ তারিখে উদ্বোধন করা হয়েছিল এবং রাজা নিজেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এটিই ছিল বাংলায় (বর্তমানে বাংলাদেশে) প্রথম গির্জা/ মন্ডলী/ চার্চ। দ্বিতীয় মন্ডলী নির্মান করেন আন্দ্রে বোভস ২৪ জুন, ১৬০০ সালে চট্রগ্রামে। এই মন্ডলী নির্মানে আরাকানি রাজা আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিলেন। গির্জাটির নাম ছিলো; “Saint John the Baptist Church” কয়েক মাস পর আরাকানিরা সন্দ্বীপ আক্রমণ করে। তারা কয়েকজন পর্তুগিজ শিশুকে ফার্নান্দেজের সাথে বন্দী করে। কারাগারে ১৪ নভেম্বর, ১৬০২ খ্রিস্টাব্দে তিনি মারা যান। বাংলার প্রথম খ্রীষ্টান শহীদ। চট্টগ্রাম, দিয়াঙ্গা এবং সন্দ্বীপ সমস্ত জেটুইটরা মন্ডলী আরাকানীদের দ্বারা ধ্বংস ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে কোচিনের বিশপ জেটুইটদের সাহায্য করার জন্য কিছু ডোমিনিকান মিশনারি পাঠান। তারা বাংলার পূর্বাঞ্চলে (১৬০১-১৬০৫ খ্রিঃ) অবস্থান করে এবং দিয়াঙ্গায় তৃতীয় মন্ডলিটিও চট্টগ্রামের ডোমিনিকানদের দ্বারা নির্মিত হয়। তবে পরে আরাকানীদের আক্রমণে ফলে এই মন্ডলীগুলোর বেশিরভাগ পুড়ে গিয়েছিলো।
০৯ জানুয়ারি, ১৬০৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ পৌল পঞ্চম (Pope Paul V) অগাস্টিন মিশনারিদের ঢাকা, আন্দরকিল্লা, শ্রীপুর, লরিকুল, কাত্রাবোত, চট্টগ্রাম জায়গায় পাঠালে বাংলায় খ্রীষ্টধর্মের একটি সোনালী অংশের প্রচলন হয়। (১৬১১-১৬২১ খ্রীঃ) পর্যন্ত তারা ঐসব জায়গায় গির্জা এবং বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। পর্তুগিজ আগষ্টিয়ান মিশনারিরা ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার প্রথম গির্জা নারিন্দায় নির্মিত হয় যেটির নাম হলো; 'Church of the Assumption' ১৬৭৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার তেজগাঁও (Tejgaon) আরো একটি চার্চ স্থাপন করেন। চার্চের নাম ছিলো; 'Holy Rossary Church' যাকে তেজগাঁও চার্চ ও বলা হয়। এক সময়ে এটিকে বলা হতো; 'Japomala Queen Church' তাছাড়া ১৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে আগষ্টিনের পুরোহিতগন গাজীপুর জেলায় নাগরীতে একটা চার্চ স্থাপন করেন ছিলেন যেই চার্চটির নাম; 'St. Nicholas of Tolentino' এছাড়াও ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে তাহারা বরিশাল জেলায় পাদ্রীশিবপুরে একটি চার্চ স্থাপন করেন। যেই চার্চটির নাম হলো; 'Our Lady of Guidance' পরবর্তী কালে আর্মেনিয়ান কিছু ব্যবসায়ী পুরানোঢাকায় আসেন ব্যবসার উদ্দেশ্যে, আর্মেনিয়ানরা পুরানোঢাকার আরমানিটোলায় বসবাস করতে শুরু করেন। তারা ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে এখানে একটি চার্চ নির্মাণ করেন। যেই চার্চটির নাম হলো; 'Holy Resurrection Church' পরবর্তী কালে ভারতে ব্রিটিশ শাসন আমলে কিছু প্রচারক পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আগমন ঘটে। তখন বাংলার কেন্দ্রবিন্দু ছিল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা। ইংল্যান্ডের ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি সোসাইটির সহযোগিতায় উইলিয়াম কেরি ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে আগমন ঘটে। উইলিয়াম কেরি প্রথমে বাংলা শিখেন। পরে তিনি ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে বাইবেলের নূতন নিয়মের গদ্য অনুবাদ করেন। ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি পবিত্র বাইবেল পুরাতন ও নূতন নিয়ম বাংলায় অনুবাদ ও মুদ্রণ করেন। এছাড়াও উইলিয়াম কেরি খ্রীষ্টান আর নন-খ্রীষ্টান উভয়ই জন্য বিশেষ ভূমিকা ও রয়েছে। পরবর্তীতে যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, বাংলাদেশ স্বাধীন পর লুথেরিয়ান চার্চ, প্রেসবিটারিয়ান চার্চ এবং অ্যাংলিকান চার্চ একসঙ্গে সংযুক্ত হয়। এই তিনটি চার্চ মিলেই Church of Bangladesh গঠিত হয়। রোমান ক্যাথলিক পর্তুগীজ দ্বারাই বাংলাদেশ খ্রিষ্টান সূত্রপাত হয়।
তথ্যসূত্রঃ
১. https://bn.m.wikipedia.org/wiki/
২. https://en-academic.com/dic.nsf/enwiki/732326
৪. History of the Portuguese in Bengal. By J. J. A. Campos. Calcutta, 1919.
৫. https://bangladesh.gov.bd/
৬. https://bn.banglapedia.org/
৭.https://www.encyclopedia.com/religion/encyclopedias-almanacs-transcripts-and-maps/bangladesh-catholic-church
0 Comments