বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিৎ কি ?
লেখকঃ- S.Murmu
আমরা দেখেছি এই বিষয় নিয়ে বিশ্বাসীদের মধ্যে নানা মতো ভেদ তৈরি হয় কিছু পক্ষ বলে যদি বাপ্তিস্ম দ্বারা উদ্ধার/ পরিএাণ হয় না তবে আমি কেন বাপ্তিস্ম নিবো কি? আর কিছু পক্ষ বলে অবশ্যই বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিত তা ছোট বাচ্চা হোক বা বুড়ো-বুড়ি হোক সকলকেই মানে মানুষ মাএই বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিত। তখন তারা নানা জবাব দিয়ে বসে আর বাইবেলের নানা বাক্যে ভুল ভাবে উপস্থাপন করে থাকেন। তো এখন যারা নতুন ও দুর্বল বিশ্বাসীদের কাছে নানা প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায় তবে আমার বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিত কি না? তো চলুন এই বিষয়ের উত্তর বিস্তারিত জানা যাক।
বাইবেল অনুসারে, বাপ্তিস্ম অবশ্যই নেওয়া উচিত। বাপ্তিস্ম সর্বদা প্রাপ্ত বয়স্কদের নেওয়া বা দেওয়া উচিত কিন্তু বাচ্চাদের নয়। এখন প্রশ্ন জেগে যায় তবে বাপ্তিস্ম কেন নেওয়া উচিত? এর উওর প্রথমতঃ স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট বাপ্তিস্ম নিয়ে ছিলো। যেহেতু খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা প্রভু যীশু কে অনুসরণ করেন তাই স্বয়ং প্রভু যীশু কে পরিধান করা উচিত। বাপ্তিস্ম সর্বদা প্রাপ্ত বয়সে নেওয়া উচিত। যেই বয়সে সকলে বোঝার মতো জ্ঞান থাকে উদাহরণ যীশু। একদিন যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তিস্ম হওয়ার জন্য গালীল থেকে যর্দ্দনে আসলেন কিন্তু যোহন তাঁহাকে অর্থাৎ যীশুকে দেখে বারন করতে চাইছিলো। যোহন যীশুকে বলে ছিলো যে, আপনার দ্বারা তো আমারই বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিৎ আর আপনি আমার কাছে এসছেন তখন যীশু যোহনকে কি বললেন কি? একটু বাক্য দেখে নেওয়া যাক;
[মথি ৩:১৫-১৬] কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন।
এখানে প্রভু যীশু সাধারণ ভাষায় এটা বলছেন যে, যখন কোনো ব্যক্তি বাপ্তিস্ম নেয় তখন তার জানা উচিত যে, সেই ব্যক্তি কেন বাপ্তিস্ম নিচ্ছে বলে তো সমস্ত ধার্মিকতা পূরণের জন্য আমাদের এরকম করা উপযুক্ত। দ্বিতীয়তঃ বাপ্তিস্ম কেন নেওয়া? তার কার হল, এটি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আজ্ঞা যেমন বাক্য বলে;
[মথি ২৮:১৯-২০] অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।
[মার্ক ১৬:১৫-১৬] আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা সমুদয় জগতে যাও, সমস্ত সৃষ্টির নিকটে সুসমাচার প্রচার কর। যে বিশ্বাস করে ও বাপ্তাইজিত হয়, সে পরিত্রাণ পাইবে; কিন্তু যে অবিশ্বাস করে, তাহার দণ্ডাজ্ঞা করা যাইবে।
[রোমীয় ৬:৩-৪] অথবা তোমরা কি জান না যে, আমরা যত লোক খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি, সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি? অতএব আমরা তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তিস্ম দ্বারা তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছি; যেন, খ্রীষ্ট যেমন পিতার মহিমা দ্বারা মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইলেন, তেমনি আমরাও জীবনের নূতনতায় চলি।
[গালাতীয় ৩:২৭] কারণ তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ, সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ।
[কলসীয় ২:১২] ফলতঃ বাপ্তিস্মে তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছ, এবং তাহাতে তাঁহার সহিত উত্থাপিতও হইয়াছ, ঈশ্বরের কার্য্যসাধনে বিশ্বাস দ্বারা হইয়াছ, যিনি তাঁহাকে মৃতগণের মধ্য হইতে উঠাইয়াছেন।
যারা বলে বাপ্তিস্ম বাচ্চাদের ও নেওয়া প্রয়োজন এটি একটি ভ্রান্ত শিক্ষা বাচ্চাদের কখনও বাপ্তিস্ম দেওয়া উচিত নয়। এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন শিশুদের বাপ্তিস্ম দেওয়া উচিৎ কি? খ্রীষ্টিয়ানদের বাপ্তিস্ম হচ্ছে জলের মধ্যে সম্পূর্ণ ডুবে যাওয়া, যা খ্রীষ্টের সাথে মৃত্যু ও কবরস্থ হওয়ার প্রতীকী। আর জলের মধ্য থেকে উঠে আসা খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের ছবি।
উপসংহারঃ- যদি একজন ব্যক্তি প্রভু যীশুকে উদ্ধারকর্তা বলে জানে এবং বুঝতে পারে যে, খ্রীষ্টিয়ানদের বাপ্তিস্ম গ্রহণ করা মানে জনগণের সামনে প্রকাশ্যে খ্রীষ্টের প্রতি তার বাধ্যতা প্রদর্শনের ধাপ। যখন সে বাপ্তিস্ম নিতে ইচ্ছুক হয় তখন বিশ্বাসী হিসাবে বাপ্তিস্ম নিতে তার আর কোন বাধা থাকে না। বাইবেল অনুসারে, খ্রীষ্টিয়ানদের বাপ্তিস্ম গুরুত্বপূর্ণ- কারণ তা বাধ্যতার একটি ধাপ এবং খ্রীষ্টকে প্রকাশ্যে বিশ্বাসে স্বীকার করে তাঁর প্রতি বিশ্বস্থ থাকার অংগীকার করা; যা কিনা খ্রীষ্টের সাথে মৃত্যুবরণ করা, কবরস্থ হওয়া ও পুনরুত্থিত হওয়ার চিহ্ন বোঝায়।
ঈশ্বর সকলকে বুঝার মতো জ্ঞান প্রদান করুন।
আমেন।।
0 Comments