গর্ভপাত সম্পর্কে বাইবেল কী বলে?
লেখকঃ S.Murmu
আজকের বিষয় বস্তু সকল খ্রিষ্টীয় ভ্রাতা ও ভগিনীগণদের উপরে প্রযোজ্য হয় তা আপনি বিবাহিত হোন বা না হোন। তা বলে এটি নয় যে, অন্য ধর্মের বিশ্বাসাবলম্বী লোকদের উপরে ও প্রযোজ্য হয় না তা কিন্তু নয়। অন্য ধর্মের বিশ্বাসাবলম্বী লোকদের উপরে ও প্রযোজ্য হয় কিন্তু অন্য ধর্মের বিশ্বাসাবলম্বী লোকদের বোঝানো আর না বোঝানো দুটোই সমান। অন্য ধর্মের বিশ্বাসাবলম্বীদের এত মহত্ব রাখে না। কয়েক দিন পূর্বেই এই সমস্যা নিয়ে বিশ্বে হৈচৈই পড়ে গেছিলো। হাঁ আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলছি। তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গর্ভপাতের আইন ছিলো সেই আইনকে রদ করা হয়, ফলে বিশ্ব এই বিষয় নিয়ে কঠিন নিন্দা জানিয়ে ছিলো। অনেকে বলছিলো এটি নারীদের মানবাধিকার (women’s human rights) কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ বিশ্ব জোর গলায় এটিই বলছিলো একজন নারীর তার স্বাধীনতা থাকা উচিত, সে তার গর্ভপাত করতে চায় কি চায় না তার স্বাধীনতা। পুরুষবাদী নারীরাও বলছিল নারী নির্যাতন বন্ধ করা হোক। এই বিষয় নিয়ে জগতে ভিন্ন ভিন্ন মতো ভেদ রয়েছে। জগত বলতে মানুষের কথা বলা হচ্ছে বা বোঝানো হয়েছে। কেউ বলে গর্ভপাত করা উচিত। আবার কেউ বলে নানা গর্ভপাত করা উচিত নয় এটি পাপ।
গর্ভপাত এর জন্য দেশ দেশান্তরে নানা আইন প্রচলিত রয়েছে। আইনগত ও অপরাধ কিন্তু আমাদের দেশের সংবিধান কিছু মূহুর্তে অর্থাৎ কারণ বশতঃ গর্ভপাত অনুমোদন দেয়। ভারতের সংবিধান হিসাবে একজন মেয়ে/স্ত্রী (মা) গর্ভের থাকা শিশু বয়স ২০ সপ্তাহ থেকে ২৪ সপ্তাহ (২৪ সপ্তাহ আদালত) হয় তবে গর্ভপাত বৈধ, কিন্ত যদি মায়ের গর্ভের থাকার শিশুর বছর ২০ সপ্তাহের অধিক হয় তখন গর্ভপাত আইনগত অবৈধ/অপরাধ। বাংলাদেশের সংবিধান হিসাবে একজন মেয়ে/স্ত্রী (মা) গর্ভের থাকা শিশুর বয়স ১২ সপ্তাহের হয় তবে গর্ভপাত বৈধ। কিন্তু যদি মায়ের গর্ভের থাকা শিশুর বয়স ১২ সপ্তাহের অধিক হয় তখন গর্ভপাত করা আইনগত অবৈধ/ অপরাধ। মনে রাখবেন কারণ বিহীন দেশের সংবিধান গর্ভপাত অনুমোদন স্বীকৃতি দেয় না। কি কি কারণ মাধ্যমে গর্ভপাত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা এখানে আলোচনা করা হয়নি। এক কোথায় বলতে গেলে আমাদের দেশ গর্ভপাতের অনুমোদন দেয়। এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক তবে বাইবেলে হিসাবে গর্ভপাত করা উচিত কিনা? আসুন বাইবেল কি শিক্ষা দেয় তা জানা যাক।
প্রথমে আলোচনা করার পূর্বে পাঠক-পাঠিকাদের জানিয়ে রাখি বাইবেল এই বিষয়ে নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোন কিছু উল্লেখ করে না। তবে বাইবেলে এমন অনেক বাক্যে রয়েছে যেগুলো গর্ভপাত বিষয়ে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি কী তা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। ওই সব বাক্যে হিসাবে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে গর্ভপাত অনুচিত। কি সেই বাক্যে চলুন দেখে নেওয়া যাক। ঈশ্বর যিরমিয় ভাববাদীর পুস্তকে বলেন;
[যিরমিয় ১:৫] উদরের মধ্যে তোমাকে গঠন করিবার পূর্ব্বে আমি তোমাকে জ্ঞাত ছিলাম, তুমি গর্ভ হইতে বাহির হইয়া আসিবার পূর্ব্বে তোমাকে পবিত্র করিয়াছিলাম; আমি তোমাকে জাতিগণের কাছে ভাববাদী করিয়া নিযুক্ত করিয়াছি।
এখানে ঈশ্বর যিরমিয় ভাববাদীকে বলছে তোমাকে মায়ের গর্ভে গঠন করার পূর্বেই জানতাম। এই কথা প্রত্যেকটি মানুষের উপরে লাগু (প্রয়োগ) হয়। অর্থাৎ ঈশ্বর আমাদের মায়ের গর্ভে গঠন করার আগেই জানতেন। ঈশ্বর শিশুকে কি ভাবে সৃষ্টি করেন তা রাজা দায়ূদ বিস্তারিত বোঝাচ্ছেন। রাজা দায়ূদ কি বলেছিলেন চলুন সেই বাক্যে দেখে নেওয়া যাক;
[গীতসংহিতা ১৩৯:১৩-১৬] বস্তুতঃ তুমিই আমার মর্ম্ম রচনা করিয়াছ; তুমি মাতৃগর্ভে আমাকে বুনিয়াছিলে। আমি তোমার স্তব করিব, কেননা আমি ভয়াবহরূপে ও আশ্চর্য্যরূপে নির্ম্মিত; তোমার কর্ম্ম সকল আশ্চর্য্য, তাহা আমার প্রাণ বিলক্ষণ জানে। আমার দেহ তোমা হইতে লুক্কায়িত ছিল না, যখন আমি গোপনে নির্ম্মিত হইতেছিলাম, পৃথিবীর অধঃস্থানে শিল্পিত হইতেছিলাম। তোমার চক্ষু আমাকে পিণ্ডাকার দেখিয়াছে, তোমার পুস্তকে সমস্তই লিখিত ছিল, যাহা দিন দিন গঠিত হইতেছিল, যখন সে সকলের একটীও ছিল না।
এখানে রাজা দায়ূদ শিশুর সৃষ্টির সম্পর্কে বর্ণনা দিচ্ছেন। একজন শিশুকে কিভাবে সৃষ্টি করা হয় বলে! তা তিনি নিজের সম্পর্ক দিয়ে বোঝাচ্ছেন। রাজা দায়ূদ বলছেন; যখন আমি গোপনে অর্থাৎ মায়ের দেহে আমার শরীর গঠন হচ্ছে তা তোমার কাছে লুকানো ছিলো না। তুমি সব কিছু দেখে ছিলে। আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ যা দিন দিন ধরে বাড়তে ছিলো। সেই গুলো তোমার গ্রন্থে লিখেছো। এখানে দেখতে পাচ্ছেন একজন শিশু কোনো ইতিফাক নয়। যারা বাইবেলকে মানে আর বিশ্বাস করে তাঁরা জানে সেই শিশুর পিছনে ঈশ্বরের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা রয়েছে। যখন একজন নারী (মেয়ে) গর্ভবতী হয় তখন তার গর্ভে (শরীরে) একটি মাংস বা হাড় পালিত হয় তা কিন্তু নয়। তার ভিতরে একটি প্রাণ প্রতিপালিত হতে শুরু করে অর্থাৎ মানুষের জীবন যা দিন দিন ধরে ঈশ্বর আশ্চর্য্য রূপে সৃষ্টি করেন। তো ঈশ্বর কোন মানুষের/ ব্যক্তির জীবনকে নষ্ট করা পাপ মনে করেন যেমন বাক্যে বলে যথা;
[যাএাপুস্তক ২০:১৩] নরহত্যা করিও না।
সে শিশু হলেও সে একজন মানুষ। আর ঈশ্বর মানুষকে হত্যা করাই মানে পাপ মনে করেন। এই বিষয়কে সুস্পষ্ট করার জন্য খুবই সুন্দর একটি বাক্যে রয়েছে। কি সেই বাক্যে চলুন তাও দেখে নেওয়া যাক;
[যাত্রাপুস্তক ২১:২২-২৪] আর পুরুষেরা বিবাদ করিয়া কোন গর্ভবতী স্ত্রীকে প্রহার করিলে যদি তাহার গর্ভপাত হয়, কিন্তু পরে আর কোন আপদ না ঘটে, তবে ঐ স্ত্রীর স্বামীর দাবী অনুসারে তাহার অর্থদণ্ড অবশ্য হইবে, ও সে বিচারকর্ত্তাদের বিচারমতে টাকা দিবে। কিন্তু যদি কোন আপদ ঘটে, তবে তোমাকে এই পরিশোধ দিতে হইবে; প্রাণের পরিশোধে প্রাণ, চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু, দন্তের পরিশোধে দন্ত, হস্তের পরিশোধে হস্ত, চরণের পরিশোধে চরণ।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন যারা মায়ের গর্ভে শিশু মৃত্যুর জন্য যে বা যারা জড়িত তাদের জন্য যে চূড়ান্ত শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে। এই বিষয়টিকে কাউকে হত্যা বা খুন করার মত একটি বিষয় হিসাবে গণ্য করা হয়। যদি ঈশ্বর গর্ভপাত অনুচিত বিবেচনা না করেন তাহলে তিনি কেন দণ্ড কার্যকর করেছিলেন কি? পরিস্কারভাবে নির্দেশ করে যে, ঈশ্বর মায়ের গর্ভে কোন শিশুকে একজন পুর্ণবয়স্ক এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ব্যক্তির মতই বিবেচনা করে থাকেন। একজন গর্ভবতী স্ত্রীর যদি গর্ভপাত হয় দেখছেন নিয়ম কত কঠিন। গর্ভের থাকা সন্তান এর প্রতি ঈশ্বর কত মহত্ব রাখতেন। হতে পারে সে শিশু কিন্তু তার ভিতরে প্রাণ তো আছে। ঈশ্বর প্রত্যেক শিশুকেও তার সাদৃশ্য সৃষ্টি করেছেন যেমন বাক্য বলে;
[আদিপুস্তক ১:২৬] পরে ঈশ্বর কহিলেন, আমরা আমাদের প্রতিমূর্ত্তিতে, আমাদের সাদৃশ্যে মনুষ্য নির্ম্মাণ করি।
[আদিপুস্তক ৯:৬] যে কেহ মনুষ্যের রক্তপাত করিবে, মনুষ্য কর্ত্তৃক তাহার রক্তপাত করা যাইবে; কেননা ঈশ্বর আপন প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে নির্ম্মাণ করিয়াছেন।
যখন কোন নারীর গর্ভে শিশুকে রচনা করেন। নিশ্চয় সেই শিশুর জন্য ঈশ্বরের কিছু পরিকল্পনা থাকে, তাই তো সেই নারী গর্ভবতী হয়েছে। তো আপনি কেন সেই শিশুকে হত্যা করছেন? ঈশ্বর তাঁর বাক্যেয় বলে যথা;
[গীতসংহিতা ১২৭:৩] দেখ, সন্তানেরা সদাপ্রভুদত্ত অধিকার, গর্ভের ফল তাঁহার দত্ত পুরস্কার।
[গীতসংহিতা ১২৭:৩] দেখ, সন্তানেরা সদাপ্রভুদত্ত অধিকার, গর্ভের ফল তাঁহার দত্ত পুরস্কার।
অর্থাৎ ঈশ্বরের সেই গর্ভের দও পুরস্কার কেন হত্যা করবেন? যখন কোন গর্ভের শিশুকে নষ্ট করা হয় অর্থাৎ গর্ভপাত হয় তখন ঈশ্বরের কি কষ্ট হয় না বল! যাকে তিনি দিন দিন ধরে ভালোবেসে রচনা করেছিলেন। নিশ্চয় ঈশ্বরের কষ্ট হয়। বর্তমান দিনে নাযায়েজ সম্পর্কের ফলে গর্ভপাত যেন সাধারণত হয়ে গেছে। এটি অবিবাহিতা অর্থাৎ যুবক ও যুবতীদের মাধ্যমে বেশি দেখা যায়। এই আধুনিক যুগে গর্ভপাত বা গর্ভের শিশুকে নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন রকম প্রথা বেরিয়ে গেছে বিজ্ঞাণ এতটাই উন্নত হয়ে গেছে যেটা আপনারা ভালোভাবে জানেন। বর্তমান দিন গার্লফ্রেন্ড ও বয়ফ্রেন্ড তৈরী করা যেন কিছু নয়। এটি যেন একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। কিন্তু পাঠক-পাঠিকাদের জানাই এটি অনুচিত, এই বিষয় বস্তু সম্পর্কে বাইবেল ভিত্তিক বিস্তারিত ভাবে জানতে এই লিংক দেখুন; ‘‘বাইবেল গার্লফ্রেন্ড ও বয়ফ্রেন্ড সম্পর্কে কি বলে?” এখন ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিতে চলচ্চিত্র জগৎ এমন ভাবে যুবক যুবতীদের মন মেজাজে ভালোবাসার হাওয়া ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা কামুক্তা (যৌনতা) ইচ্ছাকে জাগিয়ে তুলা হয়। ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিত এটি আগুনের মতো কাজ করে যা থেকে বেরনো যেন অসম্ভ হয়ে উঠেছে। অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে গর্ভবতী হয়। আর সমাজের চাপে, সমাজ কি বলবে? অর্থাৎ লোকে জানাজানি হলে কি বলবে? তখন তারা একটাই পথ দেখতে পায় যে গর্ভপাত (শিশুকে) নষ্ট করে দেই। নিজের বুদ্ধিতে রক্ষা পাওয়ার জন্য পথ খুঁজতে চায় যা কিনা একদম অনুচিত। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা করার জন্য বাইবেল সুন্দর একটি বাক্যে বলে। কি সেই বাক্যে চলুন তাও দেখে নেওয়া যাক;
[হিতোপদেশ ৩:৭] আপনার দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হইও না; সদাপ্রভুকে ভয় কর, মন্দ হইতে দূরে যাও।
যে কোন বিষয় ঈশ্বরের পরিভাষায় অর্থাৎ বাইবেলের দৃষ্টি কোন দিয়ে বিচার করা উচিত, নিজের বুদ্ধি, বিবেক দিয়ে নয়। তা বলে এটা নয় যে শুধু অবিবাহিত নারী (মেয়ে) গর্ভপাত বা গর্ভের শিশুকে নষ্ট করে তা কিন্তু নয় বিবাহিত নারীও করে থাকে। এখানে খ্রীষ্টিয়ানদের বিরুদ্ধে গর্ভপাত বিষয়ে সর্বদা একটি বিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। বলা হয় যদি কোন ধর্ষিত নারী গর্ভবতী হয়ে পড়ে তখন ও কি তার গর্ভপাত করা উচিত নয়! সেই নারী অন্য কোন ব্যক্তির কলঙ্কিত বয়ে বেড়াবে কেন? সংক্ষেপে আমরা এই উওর সুস্পষ্ট করে দিতে চাই। সত্যি এই প্রশ্নোটি খুব কঠিন কারণ যাদের সাথে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা হয়েছে তারাই জানে এটি কেমন ধরনের পরিস্থিতি, তবুও বাইবেল এটিই শিক্ষা দেয় যে গর্ভপাত করা অনুচিত। কারণ সেই শিশুর কোন দোষ নেই। সেই শিশু সম্পূর্ণভাবে নিষ্কলঙ্ক, তাই অন্যে ব্যক্তির খারাপ বা মন্দ কাজের শাস্তি তাকে দেওয়া উচিত নয়। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া কোন শিশুকে এমন কোন মমতাময় বা ভালবাসাপূর্ণ পরিবারে দত্তক হিসাবে দেওয়া যেতে পারে যাদের নিজেদের কোন সন্তান নেই, অথবা এই শিশুটি তার মায়ের কাছে থেকেই বড় হয়ে উঠতে পারে।
এখানে দেশের সংবিধানের (মানুষের) আইন কিছুটা ক্রুটি রয়েছে। দেশের সংবিধান এর হিসেবে কিছু অংশ সংক্ষেপে আলোচনা করা হচ্ছে। সংবিধান হিসেবে যদি কোন সন্তান/ শিশুর গঠন প্রকৃতিক ক্রুটি হয় যেমন শারীরিক বিকলাঙ্গ, মানসিক ভারসাম্য ক্রুটি রয়েছে তবে গর্ভপাত করা যায়। এই বিষয় নিয়ে বাইবেল কি বলে তাও একটু জানা যাক;
[যাত্রাপুস্তক ৪:১১] সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, মনুষ্যের মুখ কে নির্ম্মাণ করিয়াছে? আর বোবা,বধির, মুক্তচক্ষু বা অন্ধকে কে নির্ম্মাণ করে? আমি সদাপ্রভুই কি করি না?
এখানে ঈশ্বর মোশিকে জিজ্ঞাসা করছে আমি কি বোবা, বধির, অন্ধ, খঞ্জ মানুষকে কি সৃষ্টি করিনি বলো! মোশিকে ঈশ্বর কেন এই কথা বলছেন এই পটভূমি এখানে আলোচনা করা হচ্ছে না। এখানে শুধু এই বাক্যের সাহায্য ঈশ্বর কি বলছেন তাহাই আলোচনা করা হচ্ছে। এখানে ঈশ্বর মোশিকে বলেছেন যে, আমি বোবা, কালা, কানা, অন্ধ, তা যাই হোক আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি। তারা আমার সৃষ্টি তো এই বাক্য থেকে দেখা গেল ঈশ্বর সকল মানুষকেই নিজের স্বরূপ সৃষ্টি করেছে। এখন কি করে মানুষের আইন (দেশের সংবিধান) ঈশ্বরের এই সৃষ্টিকে অবলাঞ্চিত করতে পারে? তাই তো ঈশ্বরের বাক্য খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসীদের বলে মানুষের স্থাপন করা আইন থেকে অর্থাৎ দেশের সংবিধান থেকে সৃষ্টিকর্তা (ঈশ্বরের) স্থাপন করা আইন/ আজ্ঞাকে পালন করতে হবে যথা;
[প্রেরিত ৫:২৯] কিন্তু পিতর ও অন্য প্রেরিতগণ উত্তর করিলেন, মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।
এখানে অনেক খ্রিস্টীয় বিশ্বাসী বলতে পারে, এই পোস্টের সাহায্য আমি শিখতে পারলাম গর্ভপাত করা পাপ এটি নরহত্যা বোঝায়। তবে যারা গর্ভপাত পূর্বেই ঘটিয়েছে তারা কি ক্ষমার যোগ্য নয়? অনেকে এই কথার জন্য খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। আমার কি হবে! আমার কিনা হবে! ঈশ্বর কি আমায় ক্ষমা করবেন? এই প্রশ্নের উত্তর আমারা সুস্পষ্ট করে দিতে চাই। ইতিমধ্যে যেই মহিলা গর্ভপাত করিয়েছে, তা পুরুষের গর্ভপাত করানোকে উৎসাহিত হোক বা পাড়া-পড়শি, আত্মিয়স্বজন হোক এমনকি ডাক্তার মাধ্যমে ও হোক। সেই গর্ভপাত মহিলাদের মনে রাখতে হবে যে, অন্য যে কোন পাপের তুলনায় গর্ভপাতজনিত পাপও কম ক্ষমার যোগ্য নয়। খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে সমস্ত পাপেরই ক্ষমা পাওয়া যেতে পারে। যারা ভূল কাজ করেছেন আপনি ঈশ্বরের কাছে মন থেকে অর্থাৎ অন্তর থেকে এই মেসেজ দেখার পর ক্ষমা চাইতে পারেন, আমাদের ঈশ্বর ক্ষমাশীল ঈশ্বর, করুনাময় ঈশ্বর, অনুগ্ৰেহের ঈশ্বর, দয়ার ঈশ্বর। যেমন ঈশ্বর তার বাক্যে বলে;
[ইব্রীয় ১০:১৭] তৎপরে তিনি বলেন, ‘‘এবং তাহাদের পাপ ও অধর্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না।”
[২ করিন্থীয় ৫:১৭] ফলতঃ কেহ যদি খ্রীষ্টে থাকে, তবে নূতন সৃষ্টি হইল; পুরাতন বিষয়গুলি অতীত হইয়াছে, দেখ, সেগুলি নূতন হইয়া উঠিয়াছে।
সুতরাং আপনাকে ক্ষমা পেতে গেলে আপনার পাপ স্বীকার করতে হবে যেমন বাক্য বলে;
[১ যোহন ১:৯] যদি আমরা আপন আপন পাপ স্বীকার করি, তিনি বিশ্বস্ত ও ধার্মিক, সুতরাং আমাদের পাপ সকল মোচন করিবেন, এবং আমাদিগকে সমস্ত অধার্মিকতা হইতে শুচি করিবেন।
ঈশ্বর সকলকে বুঝার মত জ্ঞান প্রদান করুন। আমেন।।
0 Comments