মহিলাদের কি চার্চ/ মন্ডলীতে প্রচার করা উচিত?
লেখকঃ S.Murmu
প্রথম পর্ব।
এই বিষয় বস্তু সম্পর্কে আমরা দুটি পর্বে আলোচনা করেছি। উওর জানার জন্য অবশ্যই আপনারা দুটি পর্ব অনুসরণ করবেন। বর্তমান দিনে এই বিষয় নিয়ে খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসীদের মধ্যে নানা মতবাদ রয়েছে। এক পক্ষ বলে হাঁ মণ্ডলীতে প্রচার করা উচিত। তো আর এক পক্ষ বলে নানা প্রচার করা উচিত নয়। এখন যারা খ্রীষ্টতে নূতন/ দুর্বল বিশ্বাসী রয়েছে তাদের কাছে নানা প্রশ্ন চিন্থ দাঁড়িয়ে যায়। তবে মহিলারা মণ্ডলীতে প্রচার করতে পারবে কিনা!
এই উওর জানার পূর্বে আমাদের জানা প্রয়োজন ঈশ্বরের চোখে পুরুষ ও মহিলা সমান কি? তবেই আমরা নির্ণয়ে আসতে পারব তো চলুন বাক্য কি বলে দেখে নেওয়া যাক;
[আদিপুস্তক ১:২৭] পরে ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন।
আমরা এই বাক্যেয় দেখতে পাচ্ছি ঈশ্বরের চোখে পুরুষ ও মহিলা দুইজনই সমান। এখন প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যায় যদি পরুষ ও মহিলা (স্ত্রী) দুই জন সমান, তবে কেন মহিলা (স্ত্রীরা) মণ্ডলীতে প্রচার করতে পারবে না? তখন অনেকে বলে বাইবেলে কি এটা লিখা নেই যথা;
[১ যোহন ৫:৩] কেননা ঈশ্বরের প্রতি প্রেম এই, যেন আমরা তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন করি; আর তাঁহার আজ্ঞা সকল দুর্ব্বহ নয়।
[প্রেরিত ৫:২৯] ...মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।
ঈশ্বরের আজ্ঞা
[মার্ক ১৬:১৫] আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা সমুদয় জগতে যাও, সমস্ত সৃষ্টির নিকটে সুসমাচার প্রচার কর।
সাধু পৌল তার পএে বলছে।
[২ করিন্থীয় ৫:২০] অতএব খ্রীষ্টের পক্ষেই আমরা রাজদূতের কর্ম্ম করিতেছি; ঈশ্বর যেন আমাদের দ্বারা নিবেদন করিতেছেন, আমরা খ্রীষ্টের পক্ষে এই বিনতি করিতেছি, তোমরা ঈশ্বরের সহিত সম্মিলিত হও।
তারা এই সব বাক্য দেখিয়ে বলে! এই সকল বাক্য থেকে কি বোঝা যায় না, যে পুরুষ ও মহিলা (স্ত্রী) দুই জনই সুসমাচার প্রচার করতে পারবে। অর্থাৎ ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করতে হবে। হ্যাঁ তাদের উদ্দেশ্য বলি অবশ্যই সুসমাচার প্রচার তো সবাই করতে পারে, তা পুরুষ হউক বা মহিলা (স্ত্রী) হউক। বাইবেল হিসাবে ঈশ্বরের চোখে পুরুষ ও মহিলা (স্ত্রী) দুই জনই সমান। যেমন দুই জন সমান ঠিক সেই রকম ঈশ্বর পুরুষ ও মহিলা (স্ত্রীকে) একের অপরের কাছেও বশীভূতা করেছেন অর্থাৎ একের অপরের কাছে অধিন করেছেন। সেই ঈশ্বরই একটা পরিবারের ও মণ্ডলীতে ব্যবস্থাতে আজ্ঞা ও দিয়েছেন/ স্থাপন করেছেন। ঈশ্বরের ব্যবস্থাতে পুরুষের অধিন নারীকে রাখা হয়েছে যেমন বাক্য বলে;
[আদিপুস্তক ৩:১৬] পরে তিনি নারীকে কহিলেন, আমি তোমার গর্ভবেদনা অতিশয় বৃদ্ধি করিব, তুমি বেদনাতে সন্তান প্রসব করিবে; এবং স্বামীর প্রতি তোমার বাসনা থাকিবে; ও সে তোমার উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবে।
সাধু পৌল এই অধিনতা অর্থাৎ বশীভূত বিষয় করিন্থীয়দের বিস্তারিত ভাবে বোঝাছেন এই ভাবে;
[১ করিন্থীয় ১১:৩] কিন্তু আমার ইচ্ছা এই, যেন তোমরা জান যে, প্রত্যেক পুরুষের মস্তকস্বরূপ খ্রীষ্ট, এবং স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ, আর খ্রীষ্টের মস্তকস্বরূপ ঈশ্বর।
অর্থাৎ সাধু পৌল বলছে নারী পুরুষের অধিন পুরুষ খ্রীষ্টের অধিন আর খ্রীষ্ট ঈশ্বরের অধিন। আমরা এটা খুব ভালো করেই জানি, যখন স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে এসছিলেন, তিনি পিতার বিপরীত কোন কার্য্য করতেন না। তিনি সর্বদা পিতার ইচ্ছাই পালন করতেন। তিনি পিতার বশীভূত ছিলেন। এই বশীভূত শুধু পুরুষ ও মহিলা (স্ত্রী) জন্য তা কিন্তু নয়। এই বশীভূত ব্যবস্থা সকলের জনই, তা বিবাহিত মেয়ে হউক বা না হউক। বাইবেলে হিসাবে বশীভূত প্রত্যেক মানুষের স্বীকার করা উচিৎ বা চরিত্রে থাকা দরকার। আত্মিক ভাবে ঈশ্বর মণ্ডলীতে মহিলা/নারী/স্ত্রী/মেয়েদেরকে পুরুষের উপরে, মন্ডলীতে কর্তৃত্ব বা উপদেশ দেওয়ার অধিকার বারন করা হয়েছে। বরং তারা শিক্ষা গ্ৰহণ করতে পারে যেমন বাক্য বলে;
[১ তীমথিয় ২:১০-১২] কিন্তু—যাহা ঈশ্বর-ভক্তি অঙ্গীকারিণী নারীগণের যোগ্য—সৎক্রিয়ায় ভূষিতা হউক। নারী সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্ব্বক মৌনভাবে শিক্ষা করুক। আমি উপদেশ দিবার কিম্বা পুরুষের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিবার অনুমতি নারীকে দিই না, কিন্তু মৌনভাবে থাকিতে বলি।
[১ করিন্থীয় ১৪:৩৪-৩৫] যেমন পবিত্রগণের সমস্ত মণ্ডলীতে হইয়া থাকে, স্ত্রীলোকেরা মণ্ডলীতে নীরব থাকুক, কেননা কথা কহিবার অনুমতি তাহাদিগকে দেওয়া যায় না, বরং যেমন ব্যবস্থাও বলে, তাহারা বশীভূতা হইয়া থাকুক। আর যদি তাহারা কিছু শিখিতে চায়, তবে নিজ নিজ স্বামীকে ঘরে জিজ্ঞাসা করুক, কারণ মণ্ডলীতে স্ত্রীলোকের কথা বলা লজ্জার বিষয়।
এই সকল বাক্যের সাহায্য অর্থাৎ বাক্য আমাদের শিক্ষা দেয়, মণ্ডলীতে আত্মিকভাবে মহিলা/ মেয়েদের প্রভুত্ব করতে বারন করা হয়েছে। অর্থাৎ মণ্ডলীতে শিক্ষা বা প্রচার করতে বারন করা হয়েছে। এটি কোন ভেদাভেদ নয়। এটা ঈশ্বরের ব্যবস্থা, তিনি অর্থাৎ ঈশ্বর আত্মিকভাবে পুরুষের উপরে মহিলা/ নারীদের প্রভুত্ব করতে দৃঢ়রূপে নিষিদ্ধ করেছেন। বরং মণ্ডলীতে মহিলা (নারী) শিক্ষা গ্ৰহণ করতে পারে। মণ্ডলীতে শিক্ষা গ্ৰহণ করতে পুরুষ ও যায় আর নারীও যায়, তো একজন মহিলা প্রচারক হয়ে মণ্ডলীতে কি ভাবে পরুষকে উপদেশ দিতে পারে? বা সেই পুরুষ মণ্ডলীতে কি ভাবে একজন মহিলার বশীভূত হতে পারে? অর্থাৎ অধিনতা স্বীকার করতে পারবে! সেই রকম হলে তো ব্যাবস্থার বিপরীত হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে জন্য সাধু পৌল একদিন আত্মিক ভাবে বশীভূত হওয়া নিয়ে মহিলাদের (স্ত্রী) দের মাথায় আবরন দেওয়া নিয়েও বুঝিয়েছিলেন যেমন বাক্য বলে;
[১ করিন্থীয় ১১:৩-১০] কিন্তু আমার ইচ্ছা এই, যেন তোমরা জান যে, প্রত্যেক পুরুষের মস্তকস্বরূপ খ্রীষ্ট, এবং স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ, আর খ্রীষ্টের মস্তকস্বরূপ ঈশ্বর। যে কোন পুরুষ মস্তক আবৃত রাখিয়া প্রার্থনা করে, কিম্বা ভাববাণী বলে, সে আপন মস্তকের অপমান করে। কিন্তু যে কোন স্ত্রী অনাবৃত মস্তকে প্রার্থনা করে, কিম্বা ভাববাণী বলে, সে আপন মস্তকের অপমান করে; কারণ সে নির্ব্বিশেষে মুণ্ডিতার সমান হইয়া পড়ে। ভাল, স্ত্রী যদি মস্তক আবৃত না রাখে, সে চুলও কাটিয়া ফেলুক; কিন্তু চুল কাটিয়া ফেলা কি মস্তক মুণ্ডন করা যদি স্ত্রীর লজ্জার বিষয় হয়, তবে মস্তক আবৃত রাখুক। বাস্তবিক মস্তক আবরণ করা পুরুষের উচিত নয়, কেননা সে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি ও গৌরব; কিন্তু স্ত্রী পুরুষের গৌরব। কারণ পুরুষ স্ত্রীলোক হইতে নয়, বরং স্ত্রীলোক পুরুষ হইতে। আর স্ত্রীর নিমিত্ত পুরুষের সৃষ্টি হয় নাই, কিন্তু পুরুষের নিমিত্ত স্ত্রীর। এই কারণ স্ত্রীর মস্তকে কর্ত্তৃত্বের চিহ্ন রাখা কর্ত্তব্য—দূতগণের জন্য।
বতর্মান যুগে আমরা দেখতেও পাই, কিছু পাষ্টার মহিলা/নারী/স্ত্রী/মেয়েদেরকে লিডারশিপ দিয়ে দেয় মন্ডলীকে পরিচালনা করার জন্য, এমনকি মণ্ডলীতে মহিলাদের পালক/অধ্যক্ষ/পাষ্টার পদেও জায়গা দিয়ে দেয়। মানে মন্ডলীতে শিক্ষা দেওয়া পদ তাদেরকে দেওয়া হয়। বাইবেল সুস্পষ্ট ভাবে বলে মণ্ডলীতে পালক/অধ্যক্ষ/পাষ্টার পদে শুধুমাত্র পুরুষকে দেওয়া হয়েছে, বাইবেলের বিষয়ে শিক্ষা দান করার জন্য, কোনো নারীকে নয়। যথা এই সব বাক্যেয় বিস্তারিত ভাবে উত্তর রয়েছে (১ তীমথিয় ৩:১-১৩, তীত ১:৫-১৯) এই বাক্য সম্পূর্ণ ভাবে তুলে ধরা সম্ভব নয়। নচেৎ লেখা অনেক বড়ো হয়ে যাবে। এই বিষয়কে নিয়ে আমাদের আর একটি ওয়েবসাইট বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়ে। উওর জানার জন্য লিঙ্ক দেখুন। “একজন মহিলা যাজক (পাস্টার) হতে পারেন কি?”
দ্বিতীয় পর্ব খুব শিগগিরই পোস্ট করা হবে। অবশ্যই দ্বিতীয় পর্ব অনুসরণ করবেন।
2 Comments
আমরা সম্পূর্ণ একমত।
ReplyDeleteনূতন নিয়মে খ্রীষ্টের মণ্ডলীর পরিচারক হবার অধিকার কেবলমাত্র পুরুষদেরই দেওয়া হয়েছে।
আমরা পোস্ট পুনরায় কিছুটা আপডেট করেছি, তাই অনুরোধ থাকবে পুনরায় পোস্ট পড়লে খুব ভালো হয়। নিঃসন্দেহে, ঈশ্বর মন্ডলীতে পুরুষদের দায়িত্ব দিয়েছেন। এটিতে ভেদাভেদের কোনো কারণ থাকা উচিত নয়। মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Delete