বিশ্বাসীদের কি দীপাবলি/ দিওয়ালি পালন করা উচিত?
লেখকঃ- S. Murmu
দ্বিতীয় পর্বঃ-২
Image by saurabh joshi from Pixabay |
আপনারা প্রথম পর্বে জেনেছেন যে এই উৎসব অবিশ্বাসীদের একটি খুবই জনপ্রিয় উৎসব। যদি আপনারা এখনও প্রথম পর্ব দেখেননি তাহলে এখানে ক্লিক করুন “বিশ্বাসীদের দীপাবলি/ দিওয়ালি পালন করা উচিত কি?” প্রথম পর্বয় আমরা সুস্পষ্ট হয়েছি যে, এটি অন্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসব। কিন্তু বাইবেল খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসীদের দৃঢ়ভাব অন্য ধর্মের উৎসব পালন করা নিয়ে নিষিদ্ধ করেছেন যেমন বাক্য বলে যথা;
[ইফিষীয় ৪:১৭] অতএব আমি এই বলিতেছি, ও প্রভুতে দৃঢ়রূপে আদেশ করিতেছি, তোমরা আর পরজাতীয়দের ন্যায় চলিও না; তাহারা আপন আপন মনের অসার ভাবে চলে।
এই কথা আমরা পুরাতন নিয়মেও দেখতে পাই। ঈশ্বর ইস্রায়েলদেরকে বলছেন এইভাবে যেমন বাক্যে বলে যথা;
[যিরমিয় ১০:২] সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা জাতিগণের ব্যবহার শিখিও না, আকাশের নানা চিহ্ন হইতে ভীত হইও না; বাস্তবিক জাতিগণই তাহা হইতে ভীত হয়।
বাইবেল বলে যখন আমরা অবিশ্বাসী ছিলাম তখন আমরা অবিশ্বাসির ন্যায় চলতাম, কিন্তু এখন যখন আমরা প্রভুতে এসছি। বিশ্বাস সহকারে ঈশ্বরকে গ্ৰহণ করেছি, তখন আগের মতো কোন পরমপরা সংস্কৃত বা ঐতিহ্য কোন কিছু করতে পারি না। কারণ এখন আমরা নতূন সৃষ্টি হয়েছি; (২ করিন্থীয় ৫:১৭)। এখানে বিশ্বাসীদের কথা বলা হচ্ছে, যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরকে গ্ৰহণ করেছেন। আমরা ঈশ্বরকে পরিধান করেছি। পুরাতন বিষয়কে ত্যাগ করে নূতন ভাবে সৃষ্টী হলাম, সেই অর্থে অন্য জাতিদের মত কিছু করতে পারিনা। ঈশ্বরের বাক্যের মত আমাদরকে পবিএ হওয়া দরকার যথা; [লেবীয় পুস্তক ১১:৪৪, ইফিষীয় ৫:৮]
আমরা এখন প্রত্যেক বিশ্বাসী প্রভু যীশুর প্রতিনিধি (Representative) করি। আমরাই যদি ভূল পথে চলি তবে যে নূতন বিশ্বাসী মানে সদ্য যে যীশুকে গ্ৰহণ করেছে সে কি করে যীশুর উপরে বিশ্বাসকে কঠোর করে রাখতে পারবে বা পরিপক্ক করতে পারবে! সে তো আপনাকে দেখেই ভূল পথে চলে যেতে পারে। কারণ তার কাছে তো খ্রীষ্টিয় ও অন্য কোন ধর্ম দুটোই সমান বলে মনে হবে, মানে বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসির পার্থক্য রইল কথায়? এর মানে উওর কি দাঁড়াল! বিশ্বাসী হয়েও অন্য ধর্ম্মের সব কিছু করা যায়? মোটেও না কারণ বাইবেল হিসাবে পাপ বোঝায়। বাইবেল প্রত্যেক বিশ্বাসীকে কি বলে তাও একটু বাক্যে দেখে নেওয়া যাক;
[২ করিন্থীয় ১৩:৫] আপনাদের পরীক্ষা করিয়া দেখ, তোমরা বিশ্বাসে আছ কি না; প্রমাণার্থে আপনাদেরই পরীক্ষা কর। অথবা তোমরা কি আপনাদের সম্বন্ধে জান না যে, যীশু খ্রীষ্ট তোমাদিগেতে আছেন? অবশ্য যদি তোমরা অপ্রামাণিক না হও।
নতুন ও দুর্বল খ্রীষ্টনদের সাধারণ প্রশ্ন
অনেকে বলে ঠিক আছে মেনে নিলাম যে, পালন করা উচিত নয়। কিন্তু সেই দিন মানে দীপাবলি/ দিওয়ালি দিন কোন অবিশ্বাসী যদি প্রেমের খাতির বাড়িতে এসে মিষ্টি লাড়ু বা উপহার নিয়ে এসে দীপাবলি / দিওয়ালি শুভেচ্ছা জানায় তো তখন কি করব? আমি কি সেই অবিশ্বাসী বন্ধু-বান্ধব, আত্মিয় মিষ্টি লাড়ু, উপহার কি নিতে পারব? বা শুভেচ্ছা কি জানাতে পারব?
খুব ভালো প্রশ্ন। অবশ্যই মিষ্টি, উপহার নেওয়া যেতে পারে কিন্তু তার পূর্বে সব কিছু বিস্তারিত ভাবে বোঝাতে হবে। কিন্তু দীপাবলি/ দিওয়ালি শুভেচ্ছা না জানালেই ভালো হয়। যদি বিশ্বাসীরা শুভেচ্ছা জানায় তার মানে এটি বোঝায়/ প্রকাশ পায় যে, আপনি জীবন্ত ঈশ্বর ছাড়া দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর রয়েছে তা বিশ্বাস করেন। হয়তো কিছু পক্ষ বলে নানা আমি কিন্তু বিশ্বাস তো করি না, আপনি হয়তো বিশ্বাস করেন না। কিন্তু যেই ব্যক্তি আপনাকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানালেন তিনি তো বিশ্বাস করেন।
যখন আপনাকে কেউ দীপাবলি/ দিওয়ালির শুভেচ্ছা জানায় তখন আপনি বলতে পারেন God bless You ঈশ্বর তোমায়/ আপনাকে আশীর্বাদ করুন। যেহেতু আপনি ঈশ্বর ছাড়া দ্বিতীয় কোন ভগবানকে বিশ্বাস করেন না। যদি আপনি প্রকৃত পক্ষে প্রেমের খাতির/ জন্য গ্ৰহণ করছেন, তখন সেই ব্যক্তিকে জানাতে পারেন যে, আমার প্রিয় আমি ঈশ্বর ছাড়া দ্বিতীয় কোন ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি না। আর নাই বা আমি দীপাবলি/ দিওয়ালি পর্ব বলে কিছু পালন করি, তাই আমার বিশ্বাস আপনার বিশ্বাসের কোন কিছু গ্ৰহণ করা অনুমতি দেয় না। সুতরাং ক্ষমা করবেন আপনার বিশ্বাসে আমি সহভাগি হতে পারবো না। তা বলে এটি নয় যে, আমি আপনার/ তোমার বিশ্বাসকে তীরস্কার করছি বা ভগবানদের তুচ্ছ করছি তা কিন্তু নয়।
তাছাড়া তখন সেই ব্যক্তিকে এটাও বলতে পারেন যে, আমার প্রিয় সর্বপ্রথমে আপনাকে/ তোমায় ধন্যবাদ জানাই যে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আমাদের মধ্যে এক গভীর/ নিবিড় ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। সেই প্রেমের জন্য আমি আপনাকে/ তোমায় কিছু কথা বলতে চাই। তখন আপনি সেই ব্যক্তিকে বিস্তারিত ভাবে সুসমাচার শুনিয়ে দিন। হয়তো তখন অনেকের কাছে কিছু শুনার জন্য সময় থাকে না। কারণ সেই সময় সকলেই ব্যস্ত থাকে। সুসমাচার শুনার পর যদি কেউ বলে ঠিক আছে ভাই, আমি আপনার/ তোমার বিশ্বাসকে বুঝতে পেরেছি বা সমাদর করি কিন্তু এই যে, মিষ্টি, উপহার দীপাবলি/ দিওয়ালি উদ্দেশ্যে দিচ্ছি তা কিন্তু নয়, এটি আমার প্রেমের জন্য নাও। তখন অব্যশই সেই খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসী সেই মিষ্টি ও উপহার নিতে পারে, তা কোন ভুল বা পাপ নয়। বড়ো কথা হচ্ছে বিবেক (১ করিন্থীয় ১০:২৫-২৯)। এই বাক্য হিসেবে সেই ব্যক্তির বিবেক বোঝায়।
অর্থাৎ আপনি যদি আপনার বিশ্বাস না জানিয়ে সেই ব্যক্তির উপহার ও মিষ্টি গ্ৰহণ করেন তা ভুল বা পাপ। বছর পর বছর সেই ব্যক্তি তো এটাই মেনে বিশ্বাস করবেন যে, তার মানে আপনি তার বিশ্বাস, ধর্ম ভগবানদের সহমত। যখন আপনি নিজের বিশ্বাস সম্পর্কে সুস্পষ্ট করেন যে, তার ধর্ম ভগবানদের উপরে বিশ্বাস নেই। তখন সেই ব্যক্তির দেওয়া উপহার ও মিষ্টির উপরে তার ধর্মের বিশ্বাসের কোন মহত্ত্ব থাকে না। তখন সেই উপহার ও মিষ্টি সাধারণ জিনিস হয়ে যায়, তাই তখন আপনি নিতেও পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন মিষ্টি লাড়ু আর প্রসাদ কে গুলিয়ে না ফেলেন। প্রসাদ কখনও গ্ৰহণ করা উচিত নয়।
1 Comments
মাটির প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালানো বা বাজি ফাটানো যায়??
ReplyDelete