আমরা কি স্বর্গের মধ্যে আমাদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, এবং পরিবারের সদস্যদের চিনতে সক্ষম হব?
লেখকঃ- S.Murmu
আপনি হয়তো শুনেছেন অনেক লোক বলে না যে, স্বর্গের গিয়ে আগে এর সঙ্গে তার সঙ্গে দেখা করব। স্বর্গের গিয়ে আমাদের দেখা হবে। এই ধরনের নানা কথা ও হয়ে থাকে তা খ্রিষ্টীয়ান হোক বা নন খ্রিষ্টীয়ান হোক তো চলুন কথা না বাড়িয়ে সরাসরি আলোচনার দিকে অগ্রসর হই।
এই বিষয় নিয়ে বাইবেল কি বলে আমরা জানার চেষ্টা করব। বাইবেল বলে অবশ্যই স্বর্গের আমরা একের অপরকে চিনতে পারব তা আপনার নন খ্রিষ্টীয়ান মানে অবিশ্বাসী বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, এবং পরিবারের সদস্য যাই হোক না কেন! যারা প্রভু যীশুকে বিশ্বাস করেননি তাদেরকে অবশ্যই আমরা চিনতে পারব।এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন তা কিভাবে একটু বাইবেল ভিত্তি বোঝান তো দেখি।
প্রিয়তমেরা একদিন কি হয়েছে ঈশ্বরের মনোনীত একজন দাস ছিলেন যার নাম দায়ূদ। ঈশ্বর স্বয়ং দায়ূদের বংশ থেকে এই জগতে পুএ যীশুর মাধ্যমে আসছিলেন বা এসে ছিলেন। সেই দায়ূদ একদিন কি করেছে। বৎশেবার সাথে ব্যভিচার (শয়ন) করে ছিলেন। বৎশেবা অন্য এক পরুষের স্ত্রী ছিলেন। দায়ূূদ শয়ন করার ফলে যখন সেই স্ত্রী গর্ভবতী হয় অর্থাৎ বৎশেবা যখন গর্ভবতী হয়। তখন দায়ূদ নিজের স্ত্রী করার জন্য গোপনে এক ষড়যন্ত্র করে তার স্বামী কে হত্যা করেন। আর শেষে বৎশেবাকে নিজের স্ত্রী হিসাবে গ্ৰহণ করেন যেটা ঈশ্বর চোখে দায়ূদ ঘৃণিত বা মন্দ কাজ করে ছিল। দায়ূদের মন্দ কাজের জন্য ঈশ্বর দায়ূদকে দণ্ড দিতে চেয়ে ছিলেন। পরে দায়ূদ অনুতপ্ত হয় যে ভূল করেছে বলে। তখন ঈশ্বরের প্রেরিত দাস দায়ূদকে বলে সদাপ্রভু আপনার পাপ দূর করেছেন আপনি মারা যাবেন না কিন্ত আপনার শিশু মারা যাবে, কারণ এই মন্দ কাজের জন্য শত্রুদেরকে নিন্দা করার সুযোগ দিয়েছো।
তাই তোমার শিশুটি মরিবেই। ঈশ্বর তাকে দণ্ড দিবেই ঠিক করে নিয়েছে পরে ঈশ্বর বৎশেবা গর্ভে থাকা শিশুটিকে আঘাত করেন শিশুটির যন্ত্রনা শুরু হয়। শিশুটিকে বাঁচার জন্য দায়ূদ ঈশ্বরের কাছে বিনতী ও উপবাস করতে শুরু করে দিল যদি ঈশ্বর শিশুটি ছেড়ে দেয়। কিন্ত ঈশ্বর স্থির করেছেন শিশুটিকে দণ্ড দিয়েই ছাড়বেন। শেষে শিশুটি মারা যায় যখন দায়ূদ শুনলেন যে শিশুটি মারা গেছে। তখন আর তিনি উপবাস আর করলেন না তখন দায়ূদের দাসেরা তাকে বলে মালিক আপনি এটা কেমন কাজ করলেন? যখন শিশুটি জীবিত ছিল। তখন আপনি উপবাস করছিলেন। আর এখন যখন শিশুটি মারা গেছে তো আপনি উপবাস করছেন না। তখন দায়ূদ দাসদের কি বললেন ?
[২ শমূয়েল ১২:২৩] কিন্তু এখন সে মরিয়া গিয়াছে, তবে আমি কি জন্য উপবাস করিব? আমি কি তাহাকে ফিরাইয়া আনিতে পারি? আমি তাহার কাছে যাইব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরিয়া আসিবে না।
এখানে দায়ূদ বলছেন যে, শিশুটি তো মারা যাওয়া পর স্বর্গে গেছে। আমি কি তাকে সেখান থেকে ফিরে আনতে পারব বল! নিশ্চয় না, বরং আমি সেই শিশুটির কাছে একদিন মারা যাওয়ার পর চলে যাব। অর্থাৎ স্বর্গে তাকে দেখতে পাব/ চিনতে পারব তবে ও আমি তাকে ফিরেয়ে আনতে পারব না। হয়তো এখানে কিছু পক্ষ বলতে পারে নানা এখানে দায়ূদ নিজের ব্যক্তিত্ব জীবনের কথা বলেছেন থড়ি না ঈশ্বর বলেছেন। আপনাদেরকে বলি তা কিন্তু নয় বাক্য কি বলে ?
[২ পিতর ১:২০-২১] প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে, শাস্ত্রীয় কোন ভাববাণী বক্তার নিজ ব্যাখ্যার বিষয় নয়; কারণ ভাববাণী কখনও মনুষ্যের ইচ্ছাক্রমে উপনীত হয় নাই, কিন্তু মনুষ্যেরা পবিত্র আত্মা দ্বারা চালিত হইয়া ঈশ্বর হইতে যাহা পাইয়াছেন, তাহাই বলিয়াছেন।
এই বাক্য অনুসারে ঈশ্বর যদি বাইবেলে দায়ূদের এই কথা উল্লেখ করেছেন। নিশ্চয় কোন না কোন বিষয়কে বোঝানোর জন্য উদাহরন স্বরুপ উল্লেখ করেছেন। এখানে থেকে কি এটা বোঝা যায় না যে, নিশ্চয় আমরা স্বর্গে একের অপরকে চিনতে পারবই। এই বিষয়ে আরও ভালো করে বুঝতে গেলে প্রভু যীশুর একটি কাহিনীর কথা আমাদের অনুনয় করতে হবে। যেই কাহিনীটি আমাদের আধ্যাত্মিক ভাবে অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। আমি সম্পূর্ণ কাহিনী টি আলোচনা করছি না। শুধু আজকের বিষয় বস্তুকে বোঝার জন্য সংক্ষেপে কাহিনী টি আলোচনা করছি।
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তার একটি কাহিনীতে এমন ভাবে বলছেন যে, একজন ধনবান লোক ছিল, সেই ধনবান লোকটি বেগুনী রঙের কাপড় ও দামী দামী কাপড় পরতো এবং প্রতিদিন জাঁকজমকের সাথে আমোদ প্রমোদ করত। তার দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারীকে রাখা হয়েছিল। তার সারা শরীর ঘায়ে ভরা ছিল, এবং সেই ধনবানের টেবিল থেকে যে গুঁড়াগাঁড়া পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাতে চাইত। সেই ভিকারি এমন এমন অবস্থা হয়ে ছিল যে, কুকুরেরাও এসে তার ঘা চেটে দিত। এক দিন ঐ কাঙাল অর্থাৎ লাসার মারা গেল, আর স্বর্গ দূতেরা এসে তাকে নিয়ে গিয়ে অব্রাহামের কোলে বসালেন। পরে সেই ধনবানও একদিন মারা গেল এবং তাকে কবর দেওয়া হল। পরে যখন সেই ধনবান পাতালে নরকের মতো যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিল তখন কি হয়েছিল একটু বাক্য দেখে নেওয়া যাক।
[লুক ১৬:২৩-২৪] আর পাতালে, যাতনার মধ্যে, সে চক্ষু তুলিয়া দূর হইতে অব্রাহামকে এবং তাঁহার কোলে লাসারকে দেখিতে পাইল। তাহাতে সে উচ্চৈঃস্বরে কহিল, পিতঃ, অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে পাঠাইয়া দিউন, যেন সে অঙ্গুলির অগ্রভাগ জলে ডুবাইয়া আমার জিহ্বা শীতল করে, কেননা এই অগ্নিশিখায় আমি যন্ত্রণা পাইতেছি।
এই বাক্যেয় আমরা স্পষ্ট করে দেখতে পেলাম যে, সেই ধনবান ব্যক্তি যখন নিদারুণ যন্ত্রণার মধ্যে ছটফট করে তখন ভিকারি লাসারকে দেখতে পেল। ভিকারি লাসার তখন খুবই সুখে রয়েছে। আমরা দেখলাম যে সেই ধনবান ব্যক্তি ভিকারি লাসারকে চিন্তে পেরে ছিল। তো বাক্য আমাদের ইঙ্গিত করে অবশ্যই আমরা যখন মারা যাব, মারা যাওয়ার পর একের অপরকে চিনতে পারবই কিন্তু কিন্তু দুর্ভাগ্য এটা সেই লাসারের মতো কেউ স্বর্গে থাকবে কেউ নরকে থাকবে। অতএব সুসমাচার সকলেই শুনান উচিত।
0 Comments