যীশু খ্রিষ্ট এবং খ্রিষ্ট যীশু মধ্যে অর্থ পার্থক্য কি?
লেখকঃ- S.Murmu
আমরা যখন বাইবেলে অধ্যায়ন করি, তখন কিছু বাক্যে আমাদের চোখে পড়ে যায় যেখানে একবার যীশুকে ‘‘যীশুখ্রিষ্ট” বলে উল্লেখ রয়েছে তো আবার কিছু বাক্যেয় যীশুকে ‘‘খ্রিষ্টযীশু” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুই বাক্যে যখন আমাদের চোখে পড়ে মাঝে মধ্যে আর উদ্বিগ্ন হয়ে যাই এটার আবার কি অর্থ হতে পারে? এই বিষয় বস্তুর লেখক আমি ও কোন এক সময় উদ্বিগ্ন হয়ে বসে ছিলাম। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপায় এই উওর পেয়ে যাই। আজকে এই লেখায় এই উওর আলোচনা করা হবে।
Image by StockSnap from Pixabay |
বাইবেলে প্রভু ‘‘যীশুখ্রিষ্ট” নাম নূতন নিয়ম পুস্তকে ৭১ বার এসেছে। বাইবেলে সর্বপ্রথম যীশুখ্রিষ্ট নাম মথি লিখিত সুসমাচার পুস্তকে দেখতে পাওয়া যায় যথা;
[মথি ১:১৮] যীশু খ্রীষ্টের জন্ম এইরূপে হইয়াছিল। তাঁহার মাতা মরিয়ম যোষেফের প্রতি বাগ্দত্তা হইলে তাঁহাদের সহবাসের পূর্ব্বে জানা গেল, তাঁহার গর্ভ হইয়াছে—পবিত্র আত্মা হইতে।
এবং বাইবেল ‘‘যীশুখ্রিষ্ট” নাম শেষবারের মতো দেখতে পাওয়া যায় প্রকাশিত বাক্য পুস্তক যথা;
[প্রকাশিত বাক্য ১:৫] এবং যিনি ‘‘বিশ্বস্ত সাক্ষী,” মৃতগণের মধ্যে ‘‘প্রথমজাত” ও ‘‘পৃথিবীর রাজাদের কর্ত্তা,” সেই যীশু খ্রীষ্ট হইতে, অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের প্রতি বর্ত্তুক। যিনি আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন।
তাছাড়া এই নাম উল্লেখ লূক লিখিত সুসমাচার, ১ থিষলনীকীয় , ২ থিষলনীকীয়, ফিলীমন, ৩ যোহন এই সকল পুস্তক এই নাম উল্লেখীত রয়েছে।
বাইবেলে নূতন নিয়মে ‘‘খ্রিষ্টযীশু” নাম ৯১ বার এসেছে। বাইবেলে ‘‘খ্রিষ্টযীশু” নাম প্রথম বারের মতো উল্লেখ রয়েছে প্রেরিতদের কার্যের বিবরণ পুস্তকে যথা;
[প্রেরিত ২৪:২৪] কয়েক দিন পরে ফীলিক্স দ্রুষিল্লা নাম্নী আপন যিহূদী ভার্য্যার সহিত আসিয়া পৌলকে ডাকিয়া পাঠাইলেন ও তাঁহার মুখে খ্রীষ্ট যীশুর প্রতি বিশ্বাসের বিষয় শ্রবণ করিলেন।
বাইবেলে ‘‘খ্রিষ্টযীশু” নাম শেষবারের মতো উল্লেখ পাওয়া য়ায়। ফিলীমন প্রতি প্রেরিত পৌলের পত্রের যথা।
[ফিলীমন ১:২৩] খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সহবন্দি ইপাফ্রা তোমাকে মঙ্গলবাদ করিতেছেন।
তাছাড়া এই নাম দেখতে পাওয়া যায়। ২ থিষলনীকীয়, ইব্রীয়, যাকোব, ১ পিতর, ২ পিতর, ৩ পিতর, ১ যোহন, ২ যোহন, ৩ যোহন, যিহূদা, ও প্রকাশিত বাক্য।
বাইবেলে যদিও ‘‘যিশুখ্রিষ্ট” এর অর্থ ‘‘খ্রিস্ট যীশু” এর সাথে সমান, তবে জোর আলাদা। এটি হ'ল ‘‘যিশু খ্রিস্ট” এবং ‘‘খ্রিস্ট যীশু” একই ব্যক্তিকে উল্লেখ করেছেন তবে জোর দেওয়া পরিবর্তন রয়েছে।
উদাহরণ স্বরুপ যীশুখ্রিষ্টঃ
(রোমীয় ১:১, ২ তীমথিয় ২:৮) এই পুস্তক লক্ষ্য করুন এখানে সাধূ পৌল যীশুখ্রিষ্টকে মানবতার উপরে জোর দিচ্ছেন অর্থাৎ যীশুখ্রিষ্ট কে আমাদের ‘‘ত্রাণকর্তা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যীশু নামের অর্থ হল ‘‘ত্রাণকর্তা” যথা; (মথি ১:২১)।
উদাহরণ স্বরূপ খ্রিষ্টযীশুঃ
(২ করিন্থীয় ১:১, ২ তীমথিয় ২:৩) এই দুই পুস্তকের বাক্যকে লক্ষ্য করুন এখানে সাধূ পৌল খ্রীষ্ট যীশুকে ‘‘মশীহ” বলে উল্লেখ করছেন। ‘‘খ্রিষ্টযীশু” কে মশীহ উপরে জোর দিচ্ছেন। খ্রিষ্ট শব্দটি গ্ৰীক (Χριστός-Christos) শব্দ থেকে আগত ‘‘মশীহ” ও ‘‘খ্রিষ্ট” শব্দের অর্থ হল ‘‘অভিষেক” যথা; (যোহন ১:৪১)।
উপসংহার
সংক্ষেপে বলতে গেলে এই দুই কথার অর্থ হলো; যখন ‘‘খ্রিষ্ট” পূর্বে ‘‘যীশু” নাম থাকে তখন যীশুর মানবতার প্রর্দশিত করে। আর যখন ‘‘যীশু” নামের পূর্বে ‘‘খ্রিষ্ট” নাম থাকে তখন ‘‘মশীহ” কে প্রর্দশিত করে। তাছাড়া এর আর কোন বিশেষ অর্থ নেই।
0 Comments