শিশু দিবসের জন্য খ্রিষ্টীয়ান বার্তা/ Christian messages for Children's Day

শিশু দিবসের জন্য খ্রিষ্টীয়ান বার্তা

লেখকঃ S.Murmu

আজকে আমরা শিশু দিবসের সম্পর্কে খ্রিষ্টানদের কি বার্তা করে তা আলোচনা করব, সাথে এটিও আলোচনা করব শিশু দিবস বলতে কি বোঝায়? সর্বপ্রথমে শিশু দিবস বলতে কী বোঝায় তা সংক্ষেপে ধারণা দিতে চাই।

শিশু দিবস কি?

শিশু দিবসকে ইংরেজিতে বলা হয় চিলডেন্স ডে (children's Day). শিশু দিবস হলো; শিশুদের নিয়ে একটি বিশেষ দিবস যা শিশুদের সমস্ত দিক থেকে উজ্জীবিত করতে এবং তাদের অধিকার, সুরক্ষা ও শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়ার জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করা হয়। প্রতিটি শিশুই নিজ নিজ দেশের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অর্থাৎ এটা বলাও ভুল হবে না শিশুরা হলো আগামী দিনে আশার আলো। তারাই একদিন আমাদের উজ্জ্বল মুখ।

শিশু দিবস ইতিহাসঃ

শিশু দিবস রেভা: ডক্টর চার্লস লিওনার্ড দ্বারা ১৮৫৭ সালে জুনের দ্বিতীয় রবিবার শুরু হয়। যিনি চার্চ অফ দ্য রিডিমারের পাষ্টোর/ পালক ছিলেন। যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্‌স অঙ্গরাজ্যের চেলসি শহরে অবস্থিত। লিওনার্ড শিশুদের জন্য উত্সর্গীকৃত একটি বিশেষ পরিষেবার আয়োজন করেছিলেন। তিনি প্রথমে এই দিনটি রোজ ডে নামকরণ করেছিলেন। কিন্তু পরে এটি ফ্লাওয়ার সানডে নামকরণ করা হয়, অবশেষে ফ্লাওয়ার সানডে থেকে শিশু দিবস নামকরণ করা হয় যেটিকে ইংরেজিতে চিলডেন্স ডে (children's Day) বলে। শিশু দিবসটি প্রথমবার ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিল তুরস্কে পালন করা হয়। রাষ্ট্রসংঘ ১৯৫৪ সালের ২০শে নভেম্বর শিশু দিবস হিসাবে পালন করার জন্য ঘোষণা করেছিল। বিশ্ব শিশু দিবস ২০ নভেম্বর উদযাপন করা হয়, এবং আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ১লা জুন উদ্‌যাপন করা হয়। শিশু দিবস পৃথিবীর নানা প্রান্তে ভিন্ন সময়ে উদযাপন করা হয়ে থাকে। তবে প্রতিবছর ভারতে শিশু দিবস পালিত হয় ১৪ই নভেম্বর। এই দিনটি ভারতীয় জন্য বিশেষ একটি দিন। এই দিন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু কেও স্মরণ করা হয়, কারণ ১৪-ই নভেম্বর স্বাধীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঠিক তদ্রুপ বাংলাদেশে ১৭ই মার্চ শিশু দিবস উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশীয়দের এটি বিশেষ দিন কারণ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। তাই এই দিন বাংলাদেশে শিশুদের উৎসব হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

আমরা শিশু দিবস কি? শিশু দিবস কে বা কারা শুরু করেছিল? এবং দুই বাংলার শিশু দিবসের ইতিহাস/ মহত্ত্ব কি? তা সব জানলাম এখন এই শিশু দিবসের সম্পর্কে বাইবেলের বার্তা কি? তা একটু জানার চেষ্টা করি। প্রথমে বলে দেই বিশেষ করে ওই “so-called” খ্রিষ্টানদের উদ্দেশ্য, নচেৎ এই পোস্ট দেখলেই লাফাবে আর বলে বাইবেল কোথায় লেখা রয়েছে যে শিশু দিবস বা চিলডেন্স ডে (children's Day) সম্পর্কে তা বাইবেলের বাক্যে দেখান! আপনাদের বলি এই সম্পর্কে বাইবেলে দূর-দূরান্ত কিছুই উল্লেখ নেই সুতরাং উদযাপন করুন বা না করুন কোন কিছু এসে যায় না। তাই আজকে শিরোনাম এইভাবে দেওয়া হয়নি কি, খ্রিষ্টানদের কি শিশু দিবস উদযাপন করা উচিৎ? এখানে শিশুদের সম্পর্কে বাইবেল কি বলতে চাইছে সেই বার্তা অনুসরণ করি। আমরা আলোচনা কি দেখেছিলাম? আমরা আলোচনায় দেখেছিলাম এই দিন শিশুদের অধিকার, সুরক্ষা, শিক্ষা আগামী দিনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু আপনারা জানে এই শিশুরা অনেক পিতা মাতার জন্য একটি বোঝ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তখন তারা শিশুকে লাঞ্ছনা করে বশে। তাদের সব কিছু দিক দিয়ে বঞ্চিত করে। শিশুকে কখন ও সেই প্রেম থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয় তাই বাক্যে বলে যথা;

[মথি ১৮:৫] আর যে কেহ ইহার মত একটী শিশুকে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে;

শিশু দিবসের উপলক্ষে আধ্যাত্মিক বার্তা এটাই যে শিশুদের গ্ৰহণ করা উচিৎ। অনেকে আবার এমন একটি পর্যায়ে চলে যায়, যেখানে শিশুকে ভ্রুণে ও হত্যা করে বশে। এটি অনুচিত কারণ বাইবেল বলে শিশুরা ঈশ্বরের দেওয়া উপহার যথা;

[গীতসংহিতা ১২৭:৩ BERV] শিশুরা ঈশ্বরেরই উপহার। তারা হল মায়ের গর্ভ থেকে পাওয়া পুরস্কার।

বাইবেলের বার্তা শিশু দিবসের উপলক্ষে এটাই যে শিশুদের কখনও তাদের নিজের প্রাণ থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। কারণ তারা হলো ঈশ্বরের উপহার। সেই পবিত্র উপহার ঈশ্বর আপনাকে তচ্ছনচ্ছ করার অধিকার দেয় না। এই বিষয় নিয়ে পূর্বেই একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে যার বিষয় বস্তুটি হলো; “গর্ভপাত সম্পর্কে বাইবেল কী বলে?” এখানে আমরা বিষয়টি বাইবেল ভিত্তিক বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়েছি তাই অনুগ্ৰহ করে লিঙ্কটি দেখুন। সুতরাং সেই প্রাণকে তার কোনো কিছু অধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিৎ নয়। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যিনি স্বয়ং ঈশ্বর ছিলেন। তিনি শিশুদের খুব ভালোবাসতেন যেমন বাক্যে বলে যথা;

[মার্ক ১০:১৩-১৪ BCV] লোকেরা ছোট শিশুদের যীশুর কাছে নিয়ে আসছিল, যেন তিনি তাদের স্পর্শ করেন। কিন্তু শিষ্যেরা তাদের ধমক দিলেন। যীশু তা দেখে রুষ্ট হলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ছোট শিশুদের আমার কাছে আসতে দাও, ওদের বাধা দিয়ো না। কারণ ঈশ্বরের রাজ্য এদের মতো মানুষদেরই।

শিশু দিবসের উপলক্ষে আধ্যাত্মিক বার্তা এটাই যে, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মতোন আমাদের শিশুদের ভালোবাসতে হবে। শিশুরা যেমন দেশের এক-একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বা আশার আলো, ঠিক তদ্রুপ তারা ঈশ্বরের জন্য বড় হয়ে এক একটি আধ্যাত্মিক আশার আলো। বিশেষ করে তাদের উদ্দেশ্য যারা অন্ধকারে পড়ে রয়েছে অর্থাৎ সজা ভাষায় বলতে গেলে যারা পাপের মধ্যে পতিত রয়েছে তাদের পাপ থেকে উদ্ধারের সহায়কারী তাই বাইবেল শিশুদের সম্পর্কে বলে;

[হিতোপদেশ ২২:৬ SBCL] ছেলে বা মেয়ের প্রয়োজন অনুসারে তাকে শিক্ষা দাও, সে বুড়ো হয়ে গেলেও তা থেকে সরে যাবে না।

এই বাক্যে সুস্পষ্ট ভাবে শিক্ষা দিচ্ছে আমরা যেন সন্তানদের এমন ভাবে বাইবেলের বিষয়ে শিক্ষা দেই, যেই শিক্ষার ফলে শিশুরা যখন বড় হবে বড় হয়ে বুড়ো হয়ে যাবে তখন ও সেই শিক্ষার বিপরীত চলবে না। শিশু দিবসের উপলক্ষে আধ্যাত্মিক বার্তা এটাই যে, শিশুদের বাইবেলের বিষয়ে গভীর জ্ঞান/ শিক্ষা দেওয়া উচিৎ। তারা যেমন দেশের এক-একটি উজ্জ্বল রত্ন হয়ে দাঁড়ায়, ঠিক তদ্রুপ তারা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য এক একটি মহামূল্যবান রত্ন/সম্পদ তাই তাদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও দেওয়া উচিত।

ঈশ্বর এই বার্তা দিয়ে সকলকে আশীর্বাদ প্রদান করুন। আমেন।।

তথ্যসূত্রঃ

Post a Comment

0 Comments