ডঃ জাকির নায়েক মিথ্যাচার শূকর মাংস খাওয়ার সম্পর্কে খণ্ডন।
লেখকঃ- S.Murmu
আমরা দেখছি এই বিষয় নিয়ে আমাদের প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা নানা প্রশ্ন তুলে ধরে। মুসলিমদের পণ্ডিত ডঃ জাকির নায়েক। তিনি তো পরিসিমা পার করেই ফেলেন। তিনি এই বিষয় কে এমন ভাবে বোঝান যে নূতন ও দুর্বল বিশ্বাসী তার কাছে সঠিক-ই মনে হবে। হাঁ, সত্যি তিনি এমন একজন বক্তা যদি কেউ বাইবেলে নূতন ও দুর্বল বিশ্বাসী হয় আর আপনি উনার ভিডিও দেখেন তো উনার বক্তৃতা আপনার মনকে ভেদ করতে পারে।
আমি যখন বিশ্বাসে দুর্বল ছিলাম, আর ডঃ জাকির নায়েক এর ভিডিও দেখতাম দেখতে দেখতে যেন তার বক্তব্যের মধ্যে হারিয়ে ও যেতাম। এই ব্যক্তির ভিডিও যারা দেখেন, দেখবেন তিনি সর্বদা অন্যদের তাদের বিশ্বাসে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করেন মানে খোঁচা মারার-ই চেষ্টা করেন। এই ব্যক্তি অন্য ধর্মের লোকদের খোঁচা মারার জন্য বিশ্বে খুবই চর্চায় থাকেন। তো ডঃ জাকির নায়েক শূকর মাংস খাওয়া নিয়ে এক অদ্ভুদ আন্দাজে ব্যাখ্যা করে থাকেন। আর উনার একটি Favorite বাক্যে সবসময় তুলে ধরে বলেন দেখো বাইবেল কি বলে! চলো একটু ডঃ জাকির নায়েক কি সেই Favorite বাক্য দেখে নেওয়া যাক।
[মথি ৫:১৭-২০ পদ] মনে করিও না যে, আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদিগ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি; আমি লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি। কেননা আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে পর্য্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হইবে, সে পর্য্যন্ত ব্যবস্থার এক মাত্রা কি এক বিন্দুও লুপ্ত হইবে না, সমস্তই সফল হইবে। অতএব যে কেহ এই সকল ক্ষুদ্রতম আজ্ঞার মধ্যে কোন একটী আজ্ঞা লঙ্ঘন করে, ও লোকদিগকে সেইরূপ শিক্ষা দেয়, তাহাকে স্বর্গরাজ্যে অতি ক্ষুদ্র বলা যাইবে; কিন্তু যে কেহ সে সকল পালন করে ও শিক্ষা দেয়, তাহাকে স্বর্গ-রাজ্যে মহান্ বলা যাইবে। কেননা আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, অধ্যাপক ও ফরীশীদের অপেক্ষা তোমাদের ধার্ম্মিকতা যদি অধিক না হয়, তবে তোমরা কোন মতে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে না।
এই বাক্যে দেখিয়ে ডঃ জাকির নায়েক বলেন যদি খ্রিষ্টীয়ানরা যীশুকে অনুসরণ করেন তো যীশু বাইবেলে সুস্পষ্ট বলেছেন বা লাল অক্ষরে লেখা রয়েছে। যদি কেউ একটি আজ্ঞা লঙ্ঘন করে তো সে স্বর্গে যেতে পারবে না। তো ডঃ জাকির নায়েক দাবি যদি একজন খ্রিষ্টান যীশুকে অনুসরণ করেন তবে খ্রিষ্টানদের উচিত যীশুর আজ্ঞা পালন করা বা পুরাতন নিয়ম বিধান পালন করা উচিত যেমন পুরাতন নিয়মে বলা হয়েছিল শূকর মাংস খাওয়া নিয়ে।
[লেবীয় ১১:৭-৮ পদ] আর শূকর তোমাদের পক্ষে অশুচি, কেননা সে সম্পূর্ণরূপে দ্বিখণ্ড খুরবিশিষ্ট বটে, কিন্তু জাওর কাটে না। তোমরা তাহাদের মাংস ভোজন করিও না, এবং তাহাদের শবও স্পর্শ করিও না; তাহারা তোমাদের পক্ষে অশুচি।
যদি কেউ না পালন করে সে খ্রিষ্টান নয় কারণ খ্রিষ্টানরা শূকরের মাংস খায় কিন্তু আমরা (মুসলিম) নন খ্রিষ্টান হয়ে যীশুর কথাকে পালন করি। এই ব্যক্তির দাবি খ্রিষ্টানদের শূকরের মাংস খাওয়া উচিত নয়। এই ব্যক্তির ব্যাখার ভাব-ভঙ্গি দেখে তো এটাই বোঝা যায় যে, খ্রিষ্টানরা তোমরা মুসলিমদের কাছ থেকে শেখো। জাকির নায়েক এর মতোই ঠিক তদ্রুপ কিছু মুসলিম ভাই ও বোনেরা একই তালে তাল মিলিয়ে সেই একই প্রশ্ন করে থাকেন। লাফিয়ে লাফিয়ে বলে দেখো খ্রিষ্টানরা তো শূকরের মাংস খায়। খ্রিষ্টানরা তাদের ঈশ্বর/ আল্লাহ বিধান কে অমান্য করে থাকে কিন্তু দেখো আমরা নন খ্রিষ্টান হয়ে শূকরের মাংস খাই না। প্রথমতঃ এটাই যে ডঃ জাকির নায়েক ভুল ব্যাখ্যা করেন বাইবেল তো ঠিকই বলে পবিত্র আত্মা বিহীন বাইবেলের বাক্য বোঝা দুষ্কর যথা।
১ করিন্থীয় ২:১৪ পদ (SBCL) যে লোক আত্মিক নয় সে ঈশ্বরের আত্মার কাছে থেকে যা আসে তা গ্রহণ করে না, কারণ সেগুলো তার কাছে মুর্খতা। সেগুলো সে বুঝতে পারে না, কারণ পবিত্র আত্মা শিক্ষা না দিলে সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় না।
আমার প্রিয় মুসলিম ভ্রাতা ও ভগিনীগণ দয়া করে অন্যের কথা শুনে নিজেকে বিভ্রান্তি করবেন না মানে বিশ্বাস করবেন না। আপনাকে উওর জানতে গেলে বাইবেল অনুসরন করতে হবে তাহলে আপনি উওর পেয়ে যাবেন। হয়তো আপনি বাইবেলের বাক্য বুঝতে সক্ষম হতে পারছেন না তার জন্য কোন সমস্যা নেই ঈশ্বর এই জগতে তারা বহু পালক বা যারা বাইবেলের বিষয়ে শিক্ষিত, বাইবেলের বাক্যকে সঠিক অর্থে বিশ্লেষণ করতে পারেন তাদেরকে মনোনীত করেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। নিশ্চয় উনারা আপনাকে উওর বোঝাতে সক্ষম হবেন কিন্তু প্রেম সহকারে শিক্ষার মানষিকতা ভাবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন কোন লাফালাফি করে নয়। তো ডঃ জাকির নায়েক দাবি হিসেবে স্বয়ং প্রভু যীশুই উনাকে খণ্ডন করে ফেলেছেন যেমন বাক্য বলে যথা।
[মথি ১৫:১১ পদ] মুখের ভিতরে যাহা যায়, তাহা যে মনুষ্যকে অশুচি করে, এমন নয়, কিন্তু মুখ হইতে যাহা বাহির হয়, তাহাই মনুষ্যকে অশুচি করে।
মথি ১৫:১৬ পদ (CL) তোমরা কি বোঝ না যে, মুখের মধ্যে যা কিছু যায় তা পাকস্থলীতে গিয়ে পৌঁছায় এবং পরে মল হয়ে বার হয়ে যায়?
এই বাক্যেয় স্বয়ং প্রভু যীশুই ডঃ জাকির নায়েক এর ভণ্ডামি কে খণ্ডন করে ফেলেছেন। প্রভু যীশু এই বাক্যের মাধ্যমে বোঝাচ্ছেন মানুষ যা কিছু খায় তা যে মানুষকে অশুচি করে তা কিন্তু নয় কিন্তু মানুষের ভিতর থেকে যা বের হয় তাহাই মানুষেকে অশুচি করে। তো যীশু এই বাক্যের অনুসারে সকল বস্তু কে শুচি বলে ঘোষণা করেছেন। ডঃ জাকির নায়েক এই বাক্যেকে কোন উপযুক্ত বলে মনে করেন না। তিনি প্রভু যীশুর ঐ কথাকে উপযুক্ত বলে মনে করেন, যেখানে প্রভু যীশু বলেছিলেন যে আমি কোন বিধান পরিবর্তন করতে আসিনি বরং পূর্ণ করতে এসছি। ডঃ জাকির নায়েক ভণ্ডামি এখানে থেকেই প্রকাশ হয়, তিনি যেই বাক্যে উপযুক্ত বলে মনে করেন সেই বাক্যকেই সঙ্গ নেন বা সেই বাক্যের হিসেবে চলে কিন্তু যেই স্বয়ং প্রভু যীশু-ই ঘোষণা করছেন যে হাঁ শূকর মাংস খাওয়া যায়। শূকর মাংস খেলে কেউ অপবিত্র হয়ে যায় না বরং সেই মাংস খাওয়া পর তো পেটে যায় পেটে গিয়ে পরে পায়খানা/ মল এর মাধ্যমে বের হয়ে যায় তা তিনি বিশ্বাস করেন না এমনকি এই বাক্য মানতে ও চান না। এই খাওয়ার বিষয় ঈশ্বর পৌল দ্বারা খুবই সুন্দর ভাবে বুঝিয়েছেন যথা।
১ তিমথিয় ৪:৩ পদ (SBCL) এরা মানুষকে বিয়ে না করবার আদেশ দেয় এবং কোন কোন খাবার খেতে মানা করে। কিন্তু বিশ্বাসীরা, যারা ঈশ্বরের সত্যকে জেনেছে, তারা যেন ধন্যবাদ দিয়ে খায় সেইজন্যই তো ঈশ্বর এই সব খাবার সৃষ্টি করেছেন।
১ তীমথিয় ৪:৪ পদ (CL) ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, সবই ভাল এবং কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করলে কোন কিছুই অখাদ্য নয়।
এই বাক্যেয় ঈশ্বর সুস্পষ্ট ভাবে সাধূ পৌল দ্বারা সকল খাদ্যকে শুচি বলে ঘোষণা করছেন। এখানে আবার ডঃ জাকির নায়েক সমস্যা হয়ে যায়। তিনি আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বলে থাকেন নানা আমরা সাধূ পৌলের কথা বিশ্বাস করিনি না। আমারা যীশুকে ছাড়া কোন শিষ্য ও প্রেরিতদের বিশ্বাস করি না। ডঃ জাকির নায়েকের হিসাবে তিনি বলেন তার মানে তো আপনাদের হিসাবে মানে খ্রিষ্টানদের হিসেবে আপনারা প্রভু যীশু খ্রীষ্ট থেকে অধিক তার শিষ্য বা প্রেরিতদের অধিক জায়গা দিচ্ছেন তাদের কথা বিশ্বাস করেছেন। যীশুর কথায় আপনারা বিশ্বাস করছেন না। ডঃ জাকির নায়েক ভণ্ডামি এটাই যে তিনি বাইবেলকে মানেন না যে, বাইবেল ঈশ্বরের পুস্তক বলে। তিনি শুধু এটাই মানেন যেখানে উনার খাপ খেয়ে যায় সেই বাক্যকেই মানেন। বাইবেল সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছে যে বক্তারা মানে লেখকেরা নিজের হিসাবে কোন কিছু প্রস্তুত করেননি বরং ঈশ্বর তাদেরকে যেই ভাবে বলেছেন ঠিক তদ্রূপ ভাবে বিষয়কে প্রস্তুত করেছেন যেমন বাক্য বলে।
২ পিতর ১:২০-২১ পদ (IRVBEN) প্রথমে এটা জানো যে, শাস্ত্রীয় কোনো ভাববাণী বক্তার নিজের ব্যাখ্যার বিষয় না; কারণ ভাববাণী কখনও মানুষের ইচ্ছা অনুসারে আসেনি, কিন্তু মানুষেরা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে চালিত হয়ে ঈশ্বর থেকে যা পেয়েছেন, তাই বলেছেন।
আপনারা এই বাক্যে দেখতে পাচ্ছেন শাস্ত্র সুস্পষ্ট ভাবে জানায় যে ঈশ্বরের দাস নিজের হিসাবে কোন কিছুই বলেননি। ঈশ্বর যা বলেছেন প্রভু যীশুর শিষ্য ও প্রেরিতরা তাই বলেছেন। ঈশ্বর সাধূ পৌলের দ্বারা সকল খাওয়ার বস্তুকে শুচি ঘোষণা করেছেন। ডঃ জাকির নায়েক বলেন আমার যীশুর শিষ্য ও প্রেরিতদের শিক্ষায় বিশ্বাস করিনা আর মানিনা কিন্তু বাইবেল এটাই সুস্পষ্ট করেন যে, ঈশ্বর চান যেন সকল মানুষ যীশুর শিষ্য ও প্রেরিতদের শিক্ষায় বিশ্বাস করে আর তাদের শিক্ষা হিসেবে চলে যথা।
[ইফিষীয় ২:২০ পদ] তোমাদিগকে প্রেরিত ও ভাববাদিগণের ভিত্তিমূলের উপরে গাঁথিয়া তোলা হইয়াছে; তাহার প্রধান কোণস্থ প্রস্তর স্বয়ং খ্রীষ্ট যীশু।
ডঃ জাকির নায়েক তিনি যীশুর শিষ্য বা প্রেরিতদের শিক্ষায় চলতে চান কিনা তা উনার ব্যক্তিগত কিন্তু বাইবেল এটাই শিক্ষা দেয় যে হাঁ আমাদের প্রেরিতদের শিক্ষায় বিশ্বাস করে চলতে হবে। সুতরাং উওর এটাই যে অবশ্যই একজন খ্রিষ্টান শুকরের মাংস খেতে পারে উদাহরণস্বরূপ আর একটি বাক্য যথা।
প্রেরিত ১০:১৫ পদ (IRVBEN) ...ঈশ্বর যা শুচি করেছেন, তুমি তা অপবিত্র বলও না।
খ্রিষ্টানরা শূকরের মাংস খেলে পাপ-টাপ হবে তা কিন্তু নয়। নূতন নিয়মের খ্রিষ্টানদের খাওয়া ব্যাপারে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। অনেক লোক রয়েছে যারা এখন ও ভাবে যে, হাঁ শূকরের মাংস খেলে পাপ হবে তা তাদের সংবেদের ফলে অশুচি নচেৎ নয় যেমন বাক্য ও বলে যথা।
[তীত ১:১৫ পদ] শুচিগণের পক্ষে সকলই শুচি; কিন্তু কলুষিত ও অবিশ্বাসীদের পক্ষে কিছুই শুচি নয়, বরং তাহাদের মন ও সংবেদ উভয়ই কলুষিত হইয়া পড়িয়াছে।
ঈশ্বর সকলকে বুঝার মতো জ্ঞান প্রদান করুন।
আমেন।।
0 Comments